উচ্চ রক্তচাপ আজকাল একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার সময়ে ঘরে তালাবদ্ধ থাকার কারণে উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। আসলে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে শিরার দেয়ালে রক্তের চাপ বেড়ে যায়। কাজের চাপ, সময়সীমা, খারাপ জীবনধারা এবং অস্বাস্থ্যকর ডায়েট উচ্চ রক্তচাপের পিছনে কারণ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে প্রতি বছর ২০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। আমাদের শরীরে যে ধমনী থাকে সেই ধমনী শরীরে রক্তের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। যখন এই ধমনীগুলি প্রসারিত হয়ে যায়, তখন হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, যার ফলে রক্তচাপের সমস্যা হয়।
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা যদি সময়মতো না করা হয়, তাহলে তা হৃদরোগকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের জন্য খাদ্যতালিকায় অনেক পরিবর্তন আনতে হয়, যার প্রথমটি হলো খাবারে লবণের পরিমাণ কমানো।
Table of Contents
উচ্চ রক্তচাপ বা High Blood Pressure কি
রক্তচাপ বা blood pressure হল রক্তনালীতে প্রবাহিত রক্ত দ্বারা ধমনীর দেয়ালে চাপ প্রয়োগ করা। ধমনী হল টিউব যা পাম্পিং হার্ট থেকে শরীরের সমস্ত টিস্যু এবং অঙ্গগুলিতে রক্ত বহন করে। যখন আপনার রক্তচাপ অস্বাস্থ্যকর মাত্রায় পৌঁছায় এবং বেশির ভাগ সময়ে মাথা ঘোরার একটা প্রবণতা সৃষ্টি হয় – তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা High Blood Pressure বলে।
রক্তচাপের মাত্রা নির্ধারণ করা হয় আপনার রক্তের ধমনী দিয়ে প্রবাহিত রক্তের প্রবাহ এবং রক্ত পাম্প করার জন্য হৃৎপিণ্ডের দ্বারা প্রয়োগ করা শক্তির ভিত্তিতে। আপনার রক্তনালীগুলি যত পাতলা বা সঙ্কুচিত হবে, আপনার হৃদপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে তত বেশি জোর দিতে হবে এবং আপনার রক্তচাপ তত বেশি হবে।
আরও পড়ুন: 40 বছরের পরেও কীভাবে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করবেন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক সময়ে রক্তচাপের চিকিৎসা না হলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো মারাত্মক ও প্রাণঘাতী পরিস্থিতির ঝুঁকি বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের সুগার, পা ফোলা এবং চোখ ফোলা সমস্যা হতে পারে। যোগ গুরু বাবা রামদেবের মতে, উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের তাদের খাদ্যাভ্যাসের আরও যত্ন নিতে হবে। আসুন আমরা আপনাকে বলি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের খাবারে কী কী জিনিস খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ফ্যাটি লিভারের ডায়েট চার্ট।
শরীরে রক্ত চাপের সাধারণ মাত্রা
Blood Pressure Rate:
উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের খাবারে কী কী খাওয়া উচিত
কিশমিশ
কিশমিশ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে উপস্থিত পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণ করে, যা রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে। এমন অবস্থায় রাতে ঘুমানোর আগে জলের মধ্যে কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন, তারপর সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে সেবন করুন।
গাজর
গাজর শুধু শরীরে রক্তের অভাব পূরণ করে তা না, এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও খুব কার্যকর। নিয়মিত গাজর খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। আপনি চাইলে সকালে গাজরের রস পান করতে পারেন বা সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন।
খেজুর
খেজুর খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। খেজুরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন A, C, B1, B2, B5 এবং পটাসিয়াম রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেজুর খেতে পারেন। এ জন্য সকালের নাস্তার আগে হালকা গরম পানিতে খেজুর খেতে পারেন।
ওটস
উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা সকালের নাস্তায় ওটস খান। ওটস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। ওটসে ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি। এটি শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ওটস উপমাও বানাতে পারেন।
দই
দই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। দই স্বাস্থ্যের জন্যও খুব ভালো। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের অবশ্যই দই খাওয়া উচিত। দইতে চর্বি কম থাকে যার কারণে এটি ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ এবং হাড়কে মজবুত করে।
আরও পড়ুন: কিডনিতে পাথর কেন হয়? কিডনি পরিশ্রুত করার ১০ টি ঘরোয়া উপায়