Rabindranath Tagore। ২২ শে শ্রাবণ কবির প্রয়াণ দিবস

Share It!

আজ ২২শে শ্রাবণ। গত শতকের এক শ্রাবণে চলে গিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা ক্যালেন্ডারের ১৩৪৮ সালের এই দিনেই তাঁর প্রিয় ঋতুতে নির্বাপিত হয়েছিল কবির জীবনপ্রদীপ। ইংরাজি ক্যালেন্ডারের ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট তাঁর প্রিয় ঋতু বর্ষায় নিভেছিল কবির জীবনপ্রদীপ। এই কথা যাকে নিয়ে তার অজস্র কবিতা, গান, গল্প, সাহিত্য ও উপন্যাসের দাপটেই এই বাঙালি জাতির খ্যাতি ছড়িয়ে পরেছিল বিশ্বের বিভিন্ন দরবারে, আজও যার কাব্য রসের সম্মানে চিরজীবী আমরা বাঙালি তথা সারা বিশ্ব।

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাচ্য ও সাংস্কৃতিকবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন ( ২৫ শে বৈশাখ ১২৬৮ খ্রিঃ, 7 ই মে 1861 খ্রিঃ)। তাঁর পরিবারের সকল সদস্যই ছিলেন গুণের সাধনায় সমৃদ্ধ।  তবুও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিভাসম্পন্ন বহুমুখী প্রতিভা এবং অতুলনীয় সহজ- সরল ভাষার আভিজাত্যের কাছে সবাই পিছিয়ে। পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতা সারদা দেবীর এই চতুর্থতম সুপুত্রই ‘ রবি ‘, ‘ কবিগুরু ‘, বাংলার সংস্কৃতি শ্রষ্ঠা এরকমই আরো বিভিন্ন আখ্যায় ভূষিত হয়েছেন। 

    এই বছর বাংলা ক্যালেন্ডারে ২২ শে শ্রাবণ, বুধবার – ১৪২৯

    English Calendar – 8th August (Monday), 2022 

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার

    ঠাকুর পরিবার কলকাতার একটি খ্যাতনামা পরিবার। এই পরিবারের ইতিহাস প্রায় তিনশো বছরের। বাংলার নবজাগরণে এই পরিবারের সদস্যরা অনেকেই বাণিজ্য , সমাজসংস্কার ধর্ম সংস্কার আন্দোলন,  সাহিত্য,  শিল্পকলা ও সংগীত জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। 

    ঠাকুর পরিবারের আদি পদবী কুশরী এবং আদি নিবাস অধুনা পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কুশ নামক গ্রামে।  এরা শান্ডিল্য গোত্রীয় রাঢ়ী ব্রাহ্মণ।  

    মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন ব্রাহ্মধর্ম প্রচারক ও দার্শনিক।  তিনি সমাজসেবক ও ব্রাহ্মধর্ম আন্দোলনের সাথে বিশেষ ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৮১৭ সালে ১৫ই মে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর এবং মাতা দিগম্বরী দেবী। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র ছিলেন। 

    কলকাতার জোড়াসাঁকোতে অবস্থিত ঠাকুর পরিবারের প্রাচীন বাড়ি।  এই বাড়িটি বর্তমানে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।  এই বাড়িতে কবি অর্থ্যাৎ প্রথম অ- ইউরোপীয় নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন।

    আরও পড়ুন: Meditation এর উপকারিতা। কৌশল। সময়

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাল্যকাল ও বড়ো হওয়া

    ১৮৭৫ সালে মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথের মাতৃবিয়োগ ঘটে। পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশভ্রমণের নেশায় বছরের অধিকাংশ সময় কলকাতার বাইরে অতিবাহিত করতেন। তাই ধনাচ্য পরিবারে সন্তান হয়েও রবীন্দ্রনাথের ছোটবেলা কেটেছিল ভৃত্যদের অনুশাসনে।

    বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়- শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি। শৈশবে রবীন্দ্রনাথ কলকাতার ওরিয়েন্টাল সেমিনার, নর্ম্যাল স্কুলে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। কিন্তু এই চার দেওয়ালের মধ্যে থেকে শিক্ষাগ্রহণে অনাগ্রহী হওয়ায় গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ছোটবেলায় জোড়াসাঁকোর বাড়িতে কিংবা বোলপুর ও পানিহাটির বাগানবাড়িতে প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন রবীন্দ্রনাথ। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।

    Read More:  বিনায়ক বা গনেশ চতুর্থী 2023: শ্রাবন মাসের বিনায়ক চতুর্থী, জেনে নিন পূজার শুভ সময় এবং চন্দ্রোদয়ের সময়

    ১৮৭৪ সালের তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তার ‘অভিলাষ’ কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে যান রবীন্দ্রনাথ। প্রথমে তিনি বাইনের একটি পাবলিক স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। ১৮৭৯ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে আইন বিদ্যা নিয়ে পড়া শুরু করেন।

    কিন্তু সাহিত্যে চর্চার আকর্ষণে সেই পড়াশোনা তিনি সমাপ্ত করতে পারেন নি। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন শেকসপিয়র ও অন্যান্য ইংরেজ সাহিত্যিকদের রচনার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় ঘটে।  এই সময় তিনি বিশেষ মনোযোগ সহকারে পাঠ করেন রিলিজ ও মেদেচি, কোরিওলেনাস এবং অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রার। এই সময় তার ইংল্যান্ডেবাসের অভিজ্ঞতার কথা ‘ভারতী’ পত্রিকায় পত্রাকারে পাঠাতেন রবীন্দ্রনাথ।

    ১৮৮৩ সালের ৯ই ডিসেম্বর (২৪ শে অগ্রহায়ণ,  ১২৯০ বঙ্গাব্দে) ঠাকুরবাড়ির অধস্তন কর্মচারী বেণীমাধব রায়চৌধুরির কন্যা ভবতারিণীর সঙ্গে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়।  বিবাহিত জীবনে ভবতারিণীর নামকরণ হয়েছিল মৃণালিনী দেবী। রবীন্দ্রনাথ ও মৃণালিনী দেবীর পাঁচ সন্তান – মাধুরিলতা, রথীন্দ্রনাথ,  রেণুকা, মীরা, শমীন্দ্রনাথ।  এদের মধ্যে অতি অল্প বয়সেই রেণুকা ও শমীন্দ্রনাথের মৃত্যু ঘটে। 

    ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ সপরিবারসহ শিয়ালদহ ছেড়ে চলে আসেন বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের উপকন্ঠে শান্তিনিকেতনে। এখানে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৮৮ সালে একটি আশ্রম ও ১৮৯১ সালে একটি ব্রহ্ম মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।  ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধি দেন, কিন্তু পরবর্তী জালিয়ান ওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি এই উপাধি ত্যাগ দেন। 

    আরও পড়ুন: [CORN] কর্ন খাওয়ার ৫টি উপকারিতা। সাথে ২টি সহজ Recipe

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য

    রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যগুলিকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়

    ১. ভাষা ও সাহিত্য 

    ২. শিক্ষা, সমাজ, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও রাজনীতি বিষয়ক 

    ৩. ধর্ম ও দর্শন বিষয়ক 

    ৪. ব্যক্তিগত প্রবন্ধ 

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা প্রথম প্রবন্ধ ১৮৭৭ খ্রিঃ (১২৮৩ সাল) “জ্ঞানাঙ্কুর” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।  এটি মূলত কাব্য – সমালোচনামূলক প্রবন্ধ।  

    প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের অবদান অনস্বীকার্য। দেশ বিদেশের কবি সাহিত্যিক, সাহিত্যগ্রন্থ, সাহিত্যতত্ত্ব, ভাষা, ব্যকরণ, ছন্দ প্রভৃতি বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ প্রচুর লিখেছেন।  ‘প্রাচীন সাহিত্য’, ‘সাহিত্য’ , ‘আধুনিক সাহিত্য’, ‘লোকসাহিত্য ‘  এসব রবীন্দ্রনাথের ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক ভাবনার পরিচয়। স্বদেশ ও সমকালীন সমাজ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ কখনোই নিস্পৃহ ছিলেন না। রাজনীতি,  সমাজ , বিজ্ঞান,  ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ে তাঁর অভিমত সংকলিত হয়েছে ‘ আত্মশক্তি’।

    ভারতবর্ষ ‘,  ‘রাজাপ্রথা’, ‘ স্বদেশ ‘ প্রভৃতি পুস্তক পত্রিকায়।  ‘ধর্ম’,  ‘শান্তিনিকেতন’ , প্রভৃতি গ্রন্থ তাঁর এই বিষয়ে বেশ কিছু রচনার পরিচয় পাওয়া যায়।

    আরও পড়ুন: চক্র মেডিটেশন করার ৭ [সাত] সুবিধা

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আদর্শ

    বাংলা জাতি সম্প্রদায়ের কাছে রবীন্দ্রনাথের মতো এমন আদর্শ কবি, নাট্যকার,  চিত্রকর, সুরকার, উপন্যাসিক ও সাহিত্যিকের জুরি মেলা ভার। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তাঁর রচিত “জনগণমন- অধিনায়ক” ও জয় হে ” এবং” আমার সোনার বাংলা ” গান দুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। 

    Read More:  বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২১, থিম, স্লোগান। World Environment Day in Bengali

    মনে করা হয় , শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে। ১৮৭৭ সালে ‘ ভারতী ‘ পত্রিকায় কতকগুলি উল্লেখযোগ্য রচনা প্রকাশিত হয়েছিল। সেগুলি হল মাইকেল মধুসূদন দত্তের – “মেঘনাদ বধ কাব্যের সমালোচনা “, ” ভানুসিংহের পদাবলী “, ” ভিখারিণী “, ও “করুণা” নামের দুটি গল্প।  

    এছাড়াও তাঁর লেখা কয়েক হাজারের বেশি কবিতা, ছোট গল্প,  সাহিত্য,  উপন্যাস আমাদের বাঙালি জাতির কাছে যেনো ঈশ্বরের থেকে পাওয়া অতুলনীয় সাহিত্য স্বাদ। ” ভিখারিণী ” গল্পটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম ছোট গল্প।  ১৯১০ খ্রিঃ “গীতাঞ্জলি” নামক  কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় এবং এই কাব্যগ্রন্থেরই ইংরেজি অনুবাদের জন্য সুইডিশ একাডেমি তাকে সাহিত্য নোবেল পুরস্কার দেয়। এছাড়াও তিনি বহু পুরস্কার ও উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন নিজের কাজের জন্য।

    আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ন প্রথম ১০ দেশ

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হিমালয় যাত্রা

    নোবেল জয়ের পর সারা বিশ্বের কাছে এই রবীন্দ্রনাথের প্রতি আকর্ষণীয়তা বিশেষভাবে তৈরী হয়ে ওঠে । বিভিন্ন দেশ – বিদেশ থেকে তার দরবারে ডাক আসতো তাকে আমন্ত্রণের অনুরোধে। সেই সময় তিনি হিমালয় যাত্রাও করেন এবং  হিমালয়ে যাত্রা করার সময়ই তিনি লেখেন –

                   “বুঝিতাম তাহা নহে, কিন্তু মানুষের মধ্যে  এমন কিছু একটা আছে , যা সম্পূর্ণ না বুঝিলে দিন কাটানো যায় না ” – এই গোটা গল্পের ব্যাখ্যার সাথে তার হিমালয় যাত্রার যাবতীয় ঘটনা রবীন্দ্রনাথের “জীবন-পাতা- স্মৃতি” গ্রন্থে পাওয়া যায়।   

    রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন

    শান্তিনিকেতন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের নিকট অবস্থিত একটি আশ্রম ও শিক্ষাকেন্দ্র। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নিভৃতে ঈশ্বরচিন্তা ও ধর্মালোচনার উদ্দেশ্যে বোলপুর শহরের উত্তর-পশ্চিমাংশে এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। 

    ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা কালক্রমে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নেয়। ১৯১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিশ্বভারতীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। এরপর ১৯২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর, (১৩২৮ বঙ্গাব্দের ৮ পৌষ) রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিতে আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল বিশ্বভারতীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এখানে।

    রবীন্দ্রনাথ তার জীবনের দ্বিতীয়ার্ধের অধিকাংশ সময় শান্তিনিকেতন আশ্রমে অতিবাহিত করেছিলেন। তার সাহিত্য ও সৃষ্টিকর্মে এই আশ্রম ও আশ্রম-সংলগ্ন প্রাকৃতিক পরিবেশের উপস্থিতি সমুজ্জ্বল। শান্তিনিকেতন চত্বরে নিজের ও অন্যান্য আশ্রমিকদের বসবাসের জন্য রবীন্দ্রনাথ অনিন্দ্য স্থাপত্যসৌকর্যমণ্ডিত একাধিক ভবন নির্মাণ করিয়েছিলেন। 

    পরবর্তীকালে আশ্রমনিবাসী বিভিন্ন শিল্পী ও ভাস্করের সৃষ্টিকর্মে সজ্জিত হয়ে এই আশ্রম একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল হয়ে ওঠে। ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে।

    আরও পড়ুন: NH বা জাতীয় সড়কে মাইল ফলকের বিভিন্ন রং এর অর্থ এবং তাৎপর্য

    রবীন্দ্রনাথ ও বিশ্ব ভারতী  বিশ্ববিদ্যালয়

    বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। 

    এই বিশ্ববিদ্যালয়টি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরে অবস্থিত। ১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫১ সালে এটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে।

    Read More:  Teacher's Day Speech in Bengali: শিক্ষক দিবসের গুরুত্ব এবং অসাধারণ একটি গল্প

    কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। দেশবিদেশ থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করতে আসেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য প্রাক্তনীদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অস্কারবিজয়ী চিত্র-পরিচালক সত্যজিৎ রায়, জয়পুরের রানী তথা কোচবিহারের রাজকন্যা গায়েত্রী দেবী, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী প্রমুখ।

    আরও পড়ুন: মানসিক স্বাস্থ্যকে দৃঢ় করার ৮ টি সুপারফুড [Super-food]

    রবীন্দ্রনাথের সাথে মহাত্মা গান্ধীর সাক্ষাত

    দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে অহিংস পথে লড়তে লড়তেই মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি চালু করেন অভিনব এক বিদ্যালয়। সেই বিদ্যালয় শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষাতেই আবদ্ধ ছিল না। রান্নাবান্না, চাষাবাদ থেকে মলমূত্র পরিষ্কার – সবকিছুই শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে করতেন। সেখানে ভৃত্যস্থানীয় কেউ ছিলেন না, সবাই সমান।

    এরই মধ্যে আলোচনার জন্য ব্রিটিশ সরকার ডেকে পাঠাল গান্ধিজিকে। গান্ধিজি ইংল্যান্ডে চললেন, উদ্দেশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি ইংল্যান্ডের সব কটি উপনিবেশের সমস্যা নিয়েই কথা বলা। কিন্তু ছাত্রদের তিনি রেখে যাবেন কোথায়? ভারতেই পাঠানোর কথা ভাবলেন।

    প্রথমে তাঁদের রাখা হল হরিদ্বারের গুরুকূল আশ্রমে। কিন্তু সেখানকার কঠোর জাতিভেদ ব্যবস্থা গান্ধিজির পছন্দ হল না। তাঁর মনে হল, শান্তিনিকেতনই শিক্ষার্থীদের রাখার আদর্শ জায়গা। রবীন্দ্রনাথও রাজি। সেরকমই বন্দোবস্ত হল। রবীন্দ্রনাথ চিঠি পাঠালেন ইংল্যান্ডে। গান্ধিকে জানালেন,“আপনার স্কিংকস স্কুলের ছাত্রদের ভারতে এনে আমার বিদ্যালয়ে রাখাটাই যে আপনি সবচেয়ে পছন্দ করেছেন তাতে সত্যিই আনন্দ পেলাম। এই প্রিয় ছাত্রদের এখানে আমাদের মধ্যে পেয়ে সে আনন্দ আজ আরও বেশি উপভোগ করছি”।

    রবীন্দ্রনাথের জীবনাবসান:- দীর্ঘ রোগভোগের পর ৭ই আগস্ট ১৯৪১ সালে  ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে ৮০ বছর বয়সে জোড়াসাঁকোর বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

    আরও পড়ুন: 2021 টাকা জমানোর সবচেয়ে ভালো উপায়

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন কবে ?

    ২৫ শে বৈশাখ ১২৬৮ (ইংরেজী: ৭ই মে ১৮৬১) সালে তিনি কলকাতায় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস কবে ?

    ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ (ইংরেজী: ৭ই আগস্ট ১৯৪১) ৮০ বছর বয়সে জোড়াসাঁকোর বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ।

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার কেন পেয়েছিলো ?

    ১৯১০ সালে গীতাঞ্জলি কবিতার বই লিখে সাহিত্যের জন্য এই নোবেল পুরস্কার পান।

    Leave a Comment