Swami Vivekananda Motivational Story: বিবেকানন্দের এই গল্প আমাদের কঠিন মানসিকতার পরিচয় শেখায়

Share It!

আপনারা সবাই নিশ্চয়ই বাংলায় অনেক সাফল্যের গল্প পড়েছেন, যা থেকে আপনি কিছুটা অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। আমরা আপনার জন্য এখানে মনীষীদের কথা এবং সফল ব্যক্তিদের গল্প নিয়ে এসেছি যা অবশ্যই আপনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেবে,অনুপ্রাণিত করবে।

স্বামী বিবেকানন্দ হলেন ঊনবিংশ শতকের একজন ভারতীয় সন্ন্যাসী এবং দার্শনিক। তার আসল নাম হল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। ডাকনাম বিলে।আর ঠাকুর রামকৃষ্ণ এর মহান অবদানের কথা তো আমরা সকলেই জানি। উনি মা ভবতারিনীকে চাক্ষুস দর্শন করেছিলেন। আজকে এই দুই মহান মানুষের একটা সুন্দর গল্প আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম। 

সেইদিন বিকানির থেকে এক মাড়োয়ারি এসেছে দক্ষিনেশ্বরে মা ভবতারিনীর মন্দিরে। সঙ্গে মিছরির থালা আর উপড়ে একখানা গরদের কাপড়।  দেখে রামকৃষ্ণ ঠাকুরের বড় খুশি খুশি ভাব।  ডুমো ডুমো মিছরি দিয়ে ভর্তি করা থালা আর গরদেড় শাড়ী দিয়ে ঢাকা থালা নামিয়ে প্রনাম করল মাড়োয়ারি। 

দু দিন পরে নরেন এসে হাজির।  যাকে মানে না সেই আবার টানে।

‘শোন, কাছে আয় ‘ – নরেনকে ডাকলেন ঠাকুর। 

নরেন কাছে এল।  দাঁড়িয়ে রইল, বসল না। ঠাকুর বললো – ‘ শোন, এই মিছরির থালা আর গরদখানা তুই নিয়ে যা ‘

উচ্চশব্দে হেসে উঠেল নরেন।

পরবার নেংটি নেই  আবার দরবারে যেতে চায়। মিছরি দিয়ে আমি কী করব? 

আমি কী বাচ্চা ছেলে যে মিছরি দিয়ে আমাকে ভোলাবেন? 

ঠাকুর তখন বললো –

এই গরদখানা তোর মাকে নিয়ে দেগে। 

তার আহ্নিক করবার কাপড় ছিঁড়ে গিয়েছে।  সে এ পরে আহ্নিক করবে। 

বুকের মধ্যে ধ্বক করে উঠল নরেনের। তা আপনি কি করে জানলেন?  আপনাকে কে বললে? 

ওরে, আমি জানতে পাই।  উৎসটি ঠিক থাকলে ধ্বনিটি ঠিক আমার কানে লাগে।

দ্রৌপদী বস্ত্রহরনের সময় এক হাতে নিজের কাপড় ধরে আরেক হাত তুলে ডাকছিল কৃষ্ণকে।  প্রথম – প্রথম শত কান্নায়ও কৃষ্ণ সাড়া দেয়নি।  কিন্তু দ্রৌপদী যখন দু হাত তুলে দিলে,  ছেড়ে দিলে, তখনই বস্ত্রভার কাঁধে নিয়ে দাঁড়ালেন শ্রীকৃষ্ণ।  যোগক্ষেম বহন করে নিয়ে এলেন।  তেমনি যে দু হাত ছেড়ে দিয়ে ভগবানকে ডাকে, তাকে ভগবান ঠিক সাড়া দেন ।  তার ডাকটি ঠিক ভগবান শুনতে পান।

Read More:  বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার গল্প: এই গল্প সঠিক মানুষ নির্বাচন করতে শেখায় 

আরও পড়ুন: Rabindranath Tagore – ২২ শে শ্রাবণ কবির প্রয়াণ দিবস

এরপর ঠাকুর বললেন-

‘ শোন, নিয়ে যা গরদখানা। তোর নিজের জন্য বলছি না, তোর মা’র জন্য।

নরেন তখন বললো –

‘ মার জন্যে আপনার কাছে আমি ভিক্ষে করতে যাব কেন?  

  ভিক্ষে? 

‘ তা ছাড়া আবার কি!  মা আমার কাছে চেয়েছেন।  আমাকে বলেছেন কিনে দিতে।  যখন উপার্জন করতে পারব তখন কিনে দেব।  আপনার থেকে ভিক্ষে করে নেব কেন?

নরেনের তেজ দেখে প্রসন্নবয়ানে হাসতে লাগলেন ঠাকুর।  বললেন,  ‘ এনা হলে নরেন। 

আমরা হলুম নর আর তুই যে হলি নরের ইন্দ্র।

কিছুতেই নিল না নরেন।  গরদের কাপড় মা’র কত দরকার, আকস্মিক ভাবে পেয়ে গেলে কত খুশি হতেন – তা জেনেও টলল না একচুল। 

মা আমার কাছে চেয়েছেন, আমি রোজগার করে তা কিনে দেব। কিন্তু হাত পেতে ভিক্ষে নিতে যাব কেন?  না কিছুতেই ভিক্ষে করব না। স্বয়ং  ভগবানের কাছেও নয়।

নরেনের এই গল্প সত্যি আমাদের কঠিন মানসিকতার পরিচয় শেখায়।

আরও পড়ুন: স্বামী বিবেকানন্দের ছেলেবেলার দুটি ঘটনা যা বদলে দেবে আপনার চিন্তাধারা

Leave a Comment