আজকের দিনে খুশকির সমস্যা কমবেশী আমাদের সকলেরই রয়েছে। তবে আমরা একে খুব একটা গুরুত্ব দেই না। আর এরফলেই একসময় খুশকির সমস্যা বড় আকার ধারণ করে এবং চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ঘন স্বাস্থোজ্জ্বল চুলের সাধ কমবেশী আমাদের সকলেরই রয়েছে। সাজসজ্জা তখনই পরিপূর্ণতা পায় যখন একঢাল কালো চুল মাথায় শোভাবর্ধন করে। এবার ধরুন আপনি একটি কালো পোশাক পড়েছেন, আর তাতে কাঁধের কাছে একরাশ সাদা সাদা বিন্দু আপনার কেশরাশি থেকে ঝড়ে পড়ল। কেমন লাগবে? ঠিকই ধরেছেন, খুশকি। আর এই খুশকি কেবল সাজেরই নয়,আপনার গোটা চুলের স্বাস্থ্যহানি ঘটায়।
আবার শীতকালে এই সমস্যার পরিমান আরো প্রকট হয়ে দাঁড়ায়। তখন এর থেকে বাঁচতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। তাই এই সমস্যা থেকে বাঁচতে জানুন কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়।
Table of Contents
- 1 খুশকির প্রকারভেদ
- 2 খুশকি হওয়ার কারণ
- 3 খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায়
- 4 নিমের ব্যবহার:
- 5 টকদই ও লেবুর ব্যবহার:
- 6 মেথি ব্যবহারে খুশকি নিরাময়:
- 7 ভিনিগার দিয়ে খুশকি নিরাময়:
- 8 টকদই ব্যবহার:
- 9 ডিমের ব্যবহার:
- 10 অ্যালোভেরা ব্যবহার:
- 11 নারকোল তেল ব্যবহার:
- 12 কমলালেবুর খোসা ব্যবহার:
- 13 তুলসী-আমলার ব্যবহার:
- 14 Related Post
খুশকির প্রকারভেদ
খুশকি হল মাথার শুকনো চামড়া। আর এই খুশকি মুলত দুই প্রকারের হয়।
• ছোটো ছোটো গুঁড়ো মতো, যেগুলি সহজেই ঝড়ে পড়ে।
• সামান্য বড় আকারের। যেগুলি চুলের গোড়ায় এঁটে থাকে।
খুশকি হওয়ার কারণ
মাথার ত্বক অর্থাৎ স্ক্যাল্পে এক ধরনের ছত্রাক বাসা বাঁধে যার ফলে মাথার চুলে খুশকি দেখা যায়। এটি মাথার ত্বককে শুষ্ক করে সেখান থেকে চামড়া তুলতে থাকে।
১.মাথার ত্বকে অত্যধিক শুষ্কতার কারণে খুশকি হয়।
২.মাথার ত্বকে যদি অত্যধিক তেল উৎপাদিত হলে খুশকি দেখা যায়।
৩.নিয়মিত সঠিকভাবে চুল না আঁচড়ানোর ফলে খুশকি হতে পারে।
৪. চুলে ঠিকমতো শ্যাম্পু না করলে খুশকি হয়। কারণ মাথার চুল যদি দীর্ঘদিন অপরিষ্কার থাকে সে ক্ষেত্রে চুলের গোড়ায় এই ধরনের ছত্রাক তৈরি হয়, যা এই খুশকির সৃষ্টি করে।
আরো পড়ুন: ঘরোয়া উপায়ে ত্বককে করুন স্বাস্থোজ্জ্বল, মসৃণ – রইল ১৩ রকমের ঘরোয়া টিপস
খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায়
এক নজরে দেখে নিন খুশকির ঘরোয়া সমাধান বা উপায়গুলি কি কি।
নিমের ব্যবহার:
মিক্সারে জল না দিয়ে ভালো করে নিম পাতা গুলো গুঁড়ো করে নিয়ে একটি বাটির মধ্যে ওই নিম পাতার গুঁড়ো এবং অলিভ অয়েল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে ফেলুন।
১ ঘন্টা মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন।
এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিয়ে অবশ্যই কন্ডিশন করুন।
সপ্তাহে দুদিন এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
টকদই ও লেবুর ব্যবহার:
টক দই এবং লেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় এবং সারা চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
দশ মিনিট এই মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন।
এবার শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন স্নান করার আগে এই প্যাকটি মাথার চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুন: জানুন PPF Account এর ১১ রকমের সুবিধা, অসুবিধা
মেথি ব্যবহারে খুশকি নিরাময়:
একরাত আগে মেথি ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে উঠে মিক্সিতে মেথি গুলো বেটে নিন। এবার গরম জলের সাথে রাতে ভেজানো মেথির পেস্টটি মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি সারা মাথায় লাগিয়ে নিন।
এবার ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
* এটি লাগানোর পর শ্যাম্পু করার প্রয়োজন নেই। রোজ স্নান করার আগে এটি চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুন: এই যোগা করলে দীর্ঘদিন আপনার যৌবন অটুট থাকবে, সঙ্গে স্মৃতি শক্তিও
ভিনিগার দিয়ে খুশকি নিরাময়:
আধ কাপ ভিনেগার দুই কাপ জলে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণটি ভালো করে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে নিন।
১০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
এছাড়াও দু চামচ ভিনেগার এক চামচ নারকেল তেল এবং চার চামচ জল মিশিয়ে ভালো করে মিশ্রণ তৈরি করেও মাথায় লাগাতে পারেন। মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
এরপর হালকা কোন শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
*সপ্তাহে দুদিন এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুন: মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার ৭ টি উপায়।
টকদই ব্যবহার:
এক কাপ টক দই ভালোকরে ফেটিয়ে টক মাথার স্কাল্পে এবং চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
১৫ মিনিট মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রাখবেন।
এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে যে কোন হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করে মাথাটা ধুয়ে নেবেন।
* সপ্তাহে তিন দিন স্নান করার আগে এটি করতে পারেন।
ডিমের ব্যবহার:
চুল অনুযায়ী ডিম নিয়ে সেগুলি ফাটিয়ে নিয়ে ভালো করে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
এবার মিশ্রণটি চুলের ডগা থেকে গোড়া অবধি ভালো করে লাগিয়ে নিন। মিশ্রণটি মাথায় এক ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন।
এরপর ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন।
* সকালে স্নান করার আগে সপ্তাহে দুদিন এটি ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুন: কিডনিতে পাথর কেন হয়? কিডনি পরিশ্রুত করার ১০ টি ঘরোয়া উপায়
অ্যালোভেরা ব্যবহার:
অ্যালোভেরা গাছের অংশ কেটে সেখান থেকে ভালো করে অ্যালোভেরার জেল বের তাতে অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এবার মিশ্রণটি সরাসরি মাথার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
১৫ মিনিট মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন।
এরপর হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করে মাথা ধুয়ে নিন।
* সকালে স্নান করার আগে প্রতিদিন এটি ব্যবহার করতে পারেন।
নারকোল তেল ব্যবহার:
চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী নারকেল তেল নিয়ে হালকা গরম করে নিয়ে ভালো করে সারা মাথায় লাগিয়ে নিন। মাথার স্ক্যাল্প থেকে চুলের গোড়া পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে রাখুন।এরপর হালকা হাতে মাথায় মাসাজ করে দিন।
৩০ মিনিট এটি মাথায় রেখে দিন।
এরপর জল দিয়ে ভালো করে চুলটা ধুয়ে নেবেন।
* সম্ভব হলে সেদিন শ্যাম্পু না করে পরের দিন শ্যাম্পু করার চেষ্টা করবেন। এতে খুশকি দূর হওয়ার পাশাপাশি চুলটাও মোলায়েম হবে।
সপ্তাহে তিন দিন এটি ব্যবহার করলে মাথার খুশকি দূর হয়ে যাবে।
আরো পড়ুন: স্বামী বিবেকানন্দের ছেলেবেলার দুটি ঘটনা যা বদলে দেবে আপনার চিন্তাধারা
কমলালেবুর খোসা ব্যবহার:
কমলালেবুর খোসা ভালো করে গুঁড়ো করে নিয়ে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে একটি মসৃণ মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এবার মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
মিশ্রণটি ৩০ মিনিট মাথার ত্বকে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন।
এবার হালকা কোন শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
* প্রতিদিন স্নানের আগে এটি করতে পারেন।
তুলসী-আমলার ব্যবহার:
তুলসী পাতা, আমলা পাউডার জল দিয়ে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার এটি মাথার স্ক্যাল্পে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন।
৩০ মিনিট এটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন।
এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
আরো পড়ুন: ব্রণর সমস্যায় ভুগছেন? ব্রণর হাত থেকে মুক্তি পেতে এই বিশেষ কাজগুলো করুন