ভাবছেন দুধ চা খাবেন নাকি লিকার চা? জেনে নিন এই চায়ের ২৫ রকমের উপকারিতা-অপকারিতা

Share It!

চা পানে অনীহা রয়েছে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় হাতেগোনা। বেশীরভাগ মানুষের‌ই দিনের হরেক সময়ে ফরমায়েশি চায়ের অভ্যেস থেকে থাকে। সকালে উঠে অনেকের‌ই মন চা চা করতে থাকে। আবার বিকেলের অবসরে মুড়িমাখার সঙ্গে চাই চায়ের যুগলবন্দী। অসুখেও আস্থা সেই চা-তেই‌। আর আড্ডায় সিগারেটের সঙ্গে চা হবে না তা কি হয়! এর মধ্যে কেও ভালোবাসেন আবার লিকার চা, কেও কেও ভালোবাসেন দুধ চা। 

সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে বাঙালির রোজনামচায় চায়ের অনুসঙ্গ এক এবং অভিন্ন। চায়ের স্বাদে পরীক্ষা নীরিক্ষা চালিয়ে হরেক ফ্লেভারের চা আসছে বাজারে। সাবেক লিকার, দুধ চা, লেবুচা নিদেনপক্ষে গ্রীনটি দার্জিলিং-আসামের গন্ডী টপকে চীনা গোলাপ চা, কানাডিয়ান হার্বাল টির জনপ্রিয়তা‌ও উঠছে বাজারে। তবে দুধ চায়ের যোগ্য প্রতিপক্ষ না কেউ ছিল এবং না কেউ রয়েছে।

দুধ চা পানের উপকারিতা

১. এমনিতেই চা এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও অন্যান্য যৌগ। এছাড়াও এতে রয়েছে পলিফেনোল (ফ্ল্যাভোনলস ও ক্যাটেচিনস) এইসব উপাদান গুলোতে রয়েছে হৃৎসুরক্ষা প্রদানকারী গুণাগুণ। পাশাপাশি এর সঙ্গে দুধ যোগ হলে স্বাদ বৃদ্ধি পায়।

২. দুধ চা পান করলে সাময়িক স্ট্রেস কমে।

৩. চা দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে সাহায্য করে।

৪. সঠিকভাবে চিনি যোগ করলে রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে করতেও চা সহায়ক ভুমিকা পালন করে।

৫. কোষের ক্ষতি হ্রাস করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে চা।

আরো পড়ুন: 5G Technology কি। 5G Network এর ক্ষতিকারক দিক

দুধ চা পানের অপকারিতা

দুধ চা খাওয়ার উপকারের পাশাপাশি আছে কিছু কিছু অপকারিতা। যেমন 

• দুধের মধ্যে চা দিয়ে ফোটালে বিরুপ প্রভাব পড়ে। এবং তা খেলে অ্যাসিডিটি হয়।

Read More:  কিডনি [Kidney] সুস্থ রাখার ১২টি সহজ উপায়

• দুধের প্রোটিন চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলে। 

• অনিদ্রা দেখা দেয়। উদ্বেগ অনুভুতির সৃষ্টি করে।

• অতিরিক্ত দুধ চা পান করার ফলে ব্রণ জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

• কোষ্ঠকাঠিন্যের মত জটিলতা দেখা দেয় দুধ চা পান করার ফলে।

• দুধ চা অতিরিক্ত সেবন অতিরিক্ত গ্রহন রক্তচাপের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে।

• দুধ চা পান করার ফলে গ্যাস জনিত সমস্যা দেখা দেয়,ফলে বুকে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুন: [PPF] জানুন PPF Account এর ১১ রকমের সুবিধা, অসুবিধা

লিকার চা পানের উপকারিতা

সকালে ঘুম থেকে উঠে একটু পাতা চা এর সাথে একটু লেবুর রস এবং বিটনুন সহযোগে লোকের চা খেতে ভালোলাগে। এছাড়া অনেকে আছেন  যারা লিকার চা আদা বা গোলমরিচ দিয়ে খেতে ভালোবাসেন। দুধ চা এর থেকে লিকার চা খাওয়া তুলনামূলক ভাবে শরীরের পক্ষে অনেক বেশি ভালো বিশেষ করে যাদের বয়স একটু বেশি এবং যাদের অম্বলের প্রবণতা আছে। গ্রীন টি এর উপকারিতা পাশাপাশি এই লিকার চা এর উপকারিতাও অনেকাংশে কম নয়। 

১. লিকার চা বা ব্ল্যাক টি তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের দূষিত পদার্থ নিষ্কাশনের সহায়ক।

২. চিনি ছাড়া লিকার চা যদি নিয়মিত খাওয়া যায় তাহলে কিন্তু ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় অনেক খানি। 

৩. চায়ের মধ্যে যে ক্যাফেন থাকে তা কিন্তু চুল আর ত্বকের জন্য খুব ভালো। ফলতঃ রোজ সকালে এককাপ কালো চা খাওয়া বেশ ভালো।

৪. কাজের ফাঁকে কফি, দুধ চা বাদ দিয়ে র-চা খান, এতে একাগ্রতা বাড়বে।

৫. ত্বক, ব্রেস্ট, ফুসফুস ও প্রোস্টেটের ক্যানসার থেকে বাঁচতে সাহায্য করে ব্ল্যাক টি। এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

৬. জ্বর, গলাব্যাথা, ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে লিকার চায়ে আদা-তুলসী ফুটিয়ে খেলে উপশম মেলে।

Read More:  বাস্তু মেনে বাড়ি সাজিয়াছেন? না হলে আসতে পারে বিপদ। রইলো বিপদ এড়ানোর ১০ রকম উপায়

৭. লিকার চা হার্টের রক্ত সরবরাহ বাড়ায়, হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখে।

৮. ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে লিকার চা উপকারী কারণ এটি কোষ থেকে সাধারণের তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি ইনসুলিন নিঃসৃত করে এবং রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

আরো পড়ুন: হটাৎ মাথা ব্যাথা ? মাথা ব্যাথা সারিয়া ফেলার ৩টি সহজ যোগা

লিকার চা পানের অপকারিতা

লিকার চা পানের উপকারিতার পাশাপাশি আছে কিছু অপকারিতাও। আসুন সেগুলো কি আমরা জেনেনি 

• লিকার চা সেবন গর্ভপাতের সম্ভাবনা তৈরী করতে পারে।

• লিকার চা পানে এতে রক্তনালীর ক্ষতি হতে পারে,যা পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের জটিলতার সৃষ্টি করে।

• চা শরীর থেকে ভিটামিন বি শোষণ রোধ করে যা বেরিবেরি রোগের অন্যতম কারণ।

• লিকার চা হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত করে, খিদের অনুভূতি নষ্ট করে।

• অতিরিক্ত চা পান ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং ইনসোমনিয়া রোগের সৃষ্টি করে।

• বেশি লিকার চা পান করলে আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে।

• খালি পেটে চা পান করলে অ্যাসিডিটি হতে পারে।

যেকোনো পানীয়‌ই নিয়ন্ত্রণে পান করলে তা শরীরের ভালো ব‌ই খারাপ করে না। তবে অতিরিক্ত সেবন অবশ্যই খারাপের পথে নিয়ে চলে শরীরকে। ফলস্বরূপ তার নেশায় পরিনত হয়। তাই ক্যাফেইন জাতীয় দ্রব্য যতটা সম্ভব কম পান করাই উচিত।

আরো পড়ুন: Weight Loss: 40 বছরের পরেও কীভাবে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করবেন

Leave a Comment