দাঁতকে ভালো রাখার ৭টি ঘরোয়া উপায়

Share It!

একটা সুন্দর হাসি আমাদের জীবনের ক্লান্তি ভাবকে দূর করে দেয়। একটা সুন্দর হাসি আমাদের শরীর এবং মনকে ভালো রাখে। এই সুন্দর হাসিকে প্রকাশ করতে দাঁতের একটা বড়ো কার্যকারিতা আছে। দাঁত যত সুন্দর হবে তার হাসিও ততটাই মনোরম হবে। তাই দাঁতের যত্ন নেওয়া একান্তই দরকার। শুধু দাঁতকে ভালো রাখাই না তাকে সঠিক উপায়ে মজবুত রাখাও আমাদের একান্ত কর্তব্য।

দাঁতকে ভালো রাখার ৭ টি ঘরোয়া উপায়

মুখ পরিষ্কার রাখলে গহ্বর প্রতিরোধ হয় এবং দাঁত হলুদ হয় না। মুখ থেকে কোন দুর্গন্ধ নির্গত হয় না। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে মুখের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলি হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ এবং ওরাল ক্যান্সারের মতো আরও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই শুধু সকালে উঠে ব্রাশ করে দাঁত স্বাস্থ্যকর রাখা যায় না, এর জন্য বিশেষ কিছু যত্ন নিতে হয়।

দাঁতে মূল অংশগুলি কি কি 

মানুষের দাঁত চারটি বিভিন্ন ধরণের টিস্যু দিয়ে তৈরি: Pulp, DentinEnamel এবং Cementum

Pulp  

Pulp হচ্ছে দাঁতের সবচেয়ে নিচের বা ভিতরের অংশ এবং এটি আমাদের টিস্যু, স্নায়ু এবং রক্তনালীগুলির সাথে সংযোগ স্থাপন করে, যার ফলে দাঁতকে পুষ্ট করতে সাহায্য করে। 

Dentin

এটি Pulp এর  অবস্থান করে এবং এটি হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে।  এই Dentine দাঁত গঠনে এবং দাঁতকে হাড়ের মতো শক্ত রাখতে সাহায্য করে। 

Enamel

Enamel দেহের সবচেয়ে শক্ততম টিস্যু। এই enamel, dentin কে ঢাকা বা cover করে রাখে এবং দাঁতের বহিরাগত স্তর গঠন করে। এটি দাঁতগুলির খাবার চিবানোর চাপ সহ্য করতে সাহায্য করে।দাঁতগুলিকে ক্ষতিকারক ব্যাকটিরিয়া এবং গরম বা ঠান্ডাযুক্ত খাবারের তাপমাত্রায় পরিবর্তন থেকে রক্ষা করে।

Read More:  খাওয়ার ইচ্ছা কি কমে গেছে ? তাহলে শরীরে কি এই পুষ্টির অভাব আছে

Cementum

এটি আমাদের দাঁতের ঠিক গোড়ায় root এর বাইরে অবস্থান করে। দাঁতকে চোয়ালের সাথে সঠিক অবস্থানে রাখতে সাহায্য করে।  এটিও হাড়ের মতো খুব শক্ত।

আরও পড়ুন: Meditation এর উপকারিতা, কৌশল, সময়

দাঁত দুর্বল হওয়ার লক্ষণগুলি কি 

যে কোনও ব্যক্তির দাঁত দুর্বল হওয়ার লক্ষণগুলি হলো:

  • দাঁতে ব্যথা বা যন্ত্রনা হওয়া 
  • ফোলা ফোলা ভাব বা মাড়ির থেকে রক্তপাত
  • খাওয়ার সময় অস্বস্তি বোধ বা দাঁতের ভিতর শির শির করা
  • মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়া 

বিশেষজ্ঞ Dentist রা  জানিয়েছেন যে মুখ পরিষ্কার রাখার ফলে গহ্বর প্রতিরোধ হয় এবং দাঁত হলুদ হয় না। মুখের ভিতর গন্ধ হয় না। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে মুখের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলি হৃদরোগ, কিডনি রোগ এবং ওরাল ক্যান্সারের মতো আরও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। দাঁতগুলি স্বাস্থ্যকর ও মজবুত রাখতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

দাঁত ব্যথা হবার কারণ

গহ্বর বা পোকামাকড় লাগার জন্য

গহ্বর হওয়া দাঁতের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। যখন আমরা খাবার চিবাই তখন খাবারের টুকরো ওই গহ্বরে প্রবেশ করে এবং ওখানে জমে গিয়ে পরে পোকা লেগে যায়। তাই গহ্বর দেখা দিলে এটির সাথে সাথে ডাক্তার দ্বারা চিকিত্সা করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে এটি সময়মতো সংশোধন করা যায় এবং দাঁত ব্যথা হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

দাঁতের শিকড় দুর্বল হলে 

দাঁতগুলি ভুল উপায়ে ব্রাশ করা হলে তাদের শিকড়কে দুর্বল করে দেয় যার, কারণে কিছু সময়ের পরে ব্যথাও শুরু হয়। সুতরাং, যে সমস্ত লোক ভুল উপায়ে দাঁত পরিষ্কার করেন তাদের মধ্যে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া না হলে 

যে সমস্ত লোক দাঁতে সঠিক যত্ন নেন না, তাদেরও দাঁতের ব্যথার সমস্যা দেখা যায়। তাই তাদের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি। এ ছাড়া সাইনাসের সংক্রমণ থাকলেও দাঁতে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Read More:  Stress: স্ট্রেস এবং টেনশন কমানোর ১৪টি সহজ উপায়

দাঁতে ক্ষয় ধরা শুরু হলে 

দাঁত যখন অল্প অল্প ভাঙ্গতে শুরু করে, তখন তাদের মধ্যে ব্যথা শুরু হয় এবং দাঁতে বা তাদের শিকড়গুলিতে ফ্র্যাকচারের কারণে সেই জায়গায় ব্যথা শুরু হয়।

আরও পড়ুনLockdown মানসিক স্বাস্থ্যকে দৃঢ় করার ৮ টি সুপারফুড

দাঁতকে ভালো রাখার কিছু ঘরোয়া উপায় 

তুলসী 

তুলসী পাতা ভালো করে ধুয়ে মুখে চিবালে মুখের  সংক্রমণ রোধ হয় এবং ব্যাকটেরিয়া হ্রাস পায়। এইভাবে দাঁতে গহ্বরের সমস্যা হয়না এবং এর কারণে দাঁত শক্ত থাকে। এর জন্য মুখে দুর্গন্ধ হয়না। তুলসী পাতা খাওয়া ছাড়াও শুকনো তুলসী পাতা রোদে রেখে তারপরে পিষে নিন। একটি পাউডার তৈরি করুন এবং এটি দাঁতে ব্রাশ করুন। এটিও খুব উপকারী 

পুদিনা

অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-সেপটিক বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ পুদিনা – দাঁত এবং মাড়িকে স্বাস্থ্যকর রাখে। পুদিনা পাতা জলে রেখে গরম করুন এবং এটি আধা ঘন্টা গরম জলে রাখুন। এরপর এই জল মুখে রেখে কয়েক মিনিট গার্গল করুন। প্রতিদিন এইরকম করলে দাঁত মজবুত হবে। 

সরিষার তেল ও নুন

দাঁত শক্তি এবং মাড়ির স্বাস্থ্যের জন্য সরিষা এবং লবণ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি অ্যান্টি-সেপটিক এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হয়ে ব্যাকটিরিয়া থেকে রক্ষা করে। এ জন্য তিন চা চামচ সরিষার তেলে দুই চা চামচ লবণ মিশিয়ে কয়েক মিনিট আঙুলের উপর রেখে এই মিশ্রণটি দাঁতে ম্যাসাজ করুন। তারপরে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

তিলের তেল

তিলের তেল মুখে রাখুন। এটি 20 মিনিটের জন্য মুখে স্যুইশ করার পরে তেলটি থুতু দিয়ে ফেলে দিন। তারপরে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং পরে একবার ব্রাশ করে ফেলুন। প্রতিদিন এটি করার মাধ্যমে মুখের ব্যাকটেরিয়া এবং ক্ষতিকারক জীবাণু মারা যায় তবে তিলের তেল দিয়ে গার্গেল বা গিলে ফেলার চেষ্টা না করাই উচিত।

নিম 

নিমের অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল গুণ রয়েছে যা দাঁতগুলিকে মজবুত এবং সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এটিতে অনেকগুলি অ্যান্টি-সেপটিক উপাদান রয়েছে। নিয়মিত নিম-ভিত্তিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন।

Read More:  Heat Stroke: হিট স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণ কী। জানুন এর থেকে নিজেকে বাঁচানোর ১০টি উপায়

লবঙ্গ তেল

দাঁত ব্যথা, ফোলা মাড়িতে লবঙ্গ তেল কার্যকর। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং এন্টিসেপটিক বিশিষ্ট উপাদান রয়েছে। Clove Oil এর নিয়মিত ম্যাসেজ – দাঁতকে দুর্বল করে এমন ব্যাকটেরিয়াগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

কালো মরিচ এবং হলুদ

কালো মরিচ এবং হলুদ এর একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি দিয়ে দাঁত এবং মাড়িতে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। এটির ভিতর উপস্থিত থাকা  পুষ্টিগুলি দাঁতকে মজবুত করে। মনে রাখার বিষয়টি হলো যে ম্যাসেজ করার পরে প্রায় 30 মিনিটের জন্য কিছু খাওয়া বা পান করবেন না।

এইমসের ডাঃ ভি কে রাজলক্ষ্মী বলেছেন যে দাঁত ব্রাশ করাই যথেষ্ট নয়। নিয়মিত ফ্লসিং এর সাহায্যে দন্ত সমস্যার সমাধান  সম্ভব। ফ্লাসে দাঁত পরিষ্কার করার জন্য একটি থ্রেড ব্যবহার করা হয়। আসলে ব্রাশ কার্যকরভাবে দাঁতের মধ্যে ছোট ফাঁক পরিষ্কার করতে পারে না।  কিন্তু এই ফ্লসিং পদ্ধতি এটি করতে সক্ষম হয়, ফলে দাঁত ভালো থাকে।

তাও এটা জেনে রাখা ভালো যে দিনে দু-বার ব্রাশ করা অতন্ত্য জরুরি দাঁতকে ভালো রাখার জন্য। এছাড়াও ধূমপান থেকে যথা সম্ভব বিরত থাকতে হবে। 

আরো পড়ুন: টেনশন কমানোর ১৪টি সহজ উপায়

আরও পড়ুন: হটাৎ মাথা ব্যাথা ? মাথা ব্যাথা সারিয়া ফেলার ৩টি সহজ যোগা [YOGA]

Leave a Comment