মহাবীর জয়ন্তী প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে মহাবীর জয়ন্তী পালিত হয়। এ বছর মহাবীর জয়ন্তী ০৪ এপ্রিল (ইংরেজী)। জৈন ধর্মের ২৪তম তীর্থঙ্কর মহাবীর স্বামী বিহারের কুন্দগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভগবান মহাবীরের বাল্য নাম ছিল বর্ধমান।
কথিত আছে যে, 30 বছর বয়সে তিনি রাজপ্রাসাদের ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে সত্যের সন্ধানে বনে যান। ঘন অরণ্যে বসবাস করে তিনি বারো বছর কঠোর তপস্যা করেন, এরপর তিনি রিজুবালুকা নদীর তীরে শাল গাছের নিচে কৈবল্য জ্ঞান লাভ করেন।
ভগবান মহাবীর সমাজের উন্নতি এবং মানুষের কল্যাণের জন্য প্রচার করেছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে আসুন জেনে নেওয়া যাক মহাবীর জয়ন্তীর শুভ সময় এবং তার চিন্তাভাবনা ঠিক কি ছিল।
Table of Contents
মহাবীর জয়ন্তী 2023 তারিখ এবং শুভ সময়
পঞ্জিকা অনুসারে, চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথি শুরু হবে ০৩ এপ্রিল ২০২৩ সকাল ০৬:২৪ মিনিটে। এই তারিখটি পরের দিন ০৪ এপ্রিল ২০২৩ সকাল ০৮:০৫ ঘটিকায় শেষ হবে। উদয় তিথি গৃহীত হচ্ছে ০৪ এপ্রিল, তাই মহাবীর জয়ন্তী পালিত হবে শুধুমাত্র ০৪ এপ্রিল।
মহাবীর জয়ন্তী কী ?
পুরান অনুসারে, জৈন ধর্মের ২৪তম এবং শেষ তীর্থঙ্কর ভগবান মহাবীরের জন্মবার্ষিকী প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে পালিত হয়। জৈন ধর্মের বিশেষজ্ঞদের মতে, ভগবান মহাবীর বিহারের কুন্দলপুরের রাজপরিবারে ৫৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ত্রিশ বছর বয়সে রাজকীয় আড়ম্বর জীবন, সংসার সবকিছু তিনি ত্যাগ করেছিলেন এবং শেষ অবধি এই পথে হেঁটে মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর কাজ করেছেন। এই জন্য এই দিনটিকে মহাবীর জয়ন্তী হিসাবে পালন করি।
আরো পড়ুন: ২০২৩ সালে বলিউডে শীর্ষে থাকা প্রথম ১০ জন সুন্দরী অভিনেত্রী
মহাবীর জয়ন্তীর তাৎপর্য
মহাবীর জয়ন্তী জৈন সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে অত্যন্ত বিশেষ বলে মনে করা হয়। মহাবীর জয়ন্তীর দিন জৈন ধর্মাবলম্বীরা প্রভাতফেরী, আচার-অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রা বের করেন। ভগবান মহাবীর মানুষের মোক্ষলাভের জন্য পাঁচটি নিয়ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা আমরা পঞ্চ সিদ্ধান্ত নামে জানি।
মহাবীরের পাঁচ নীতি
এই পাঁচটি নীতি হল অহিংসা, অস্তেয়, ব্রহ্মচর্য, সত্য ও অপগ্রহ।
সত্য ও অহিংসা মানুষের প্রথম কর্তব্য।
অন্যদিকে, আস্তেয় মানে চুরি না করা, একজন আধ্যাত্মিক শান্তি ও মুক্তি লাভ করে।
অপরিগ্রহ অর্থাৎ বিষয় বা বস্তুর প্রতি আসক্তি না থাকার ফলে একজন ব্যক্তি জাগতিক আকর্ষণ ত্যাগ করে আধ্যাত্মিকতার পথে এগিয়ে যাওয়া।
যে ব্যক্তি ব্রহ্মচর্য অনুসরণ করে সে সহজেই তার ইন্দ্রিয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করে।
মহাবীর জয়ন্তী কিভাবে পালন করা হয়
মহাবীর জয়ন্তী জৈন সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে অত্যন্ত বিশেষ বলে মনে করা হয়। মহাবীর জয়ন্তীর দিন জৈন ধর্মাবলম্বীরা প্রভাতফেরী, আচার-অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রা বের করে। ভগবান মহাবীর মানুষের জন্য মোক্ষলাভের জন্য পাঁচটি নিয়ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা আমরা পঞ্চ সিদ্ধান্ত নামে জানি। এই পাঁচটি নীতি হল অহিংসা, অস্তেয়, ব্রহ্মচর্য, সত্য ও অপগ্রহ।
মহাবীর জয়ন্তীর দিন ভগবান মহাবীরের আরাধনা করা হয় এবং তাঁর শিক্ষাকে স্মরণ করে তাঁর দেওয়া নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও এ উপলক্ষে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরো পড়ুন: Poila Baisakh 2023: শুভ নববর্ষের Wishes, Messages, Quotes, Images
মহাবীরের কয়েকটি ভাবনা
নিজেকে জয় করুন। কারণ এই একটি জিনিস লক্ষাধিক শত্রুকে জয় করার চেয়ে উত্তম।
প্রতিটি আত্মা নিজেই সুখী এবং সর্বজ্ঞ। সুখ আমাদের মধ্যেই আছে, বাইরে তা খোঁজার চেষ্টা করবেন না।
প্রতিটি জীবের প্রতি দয়া করুন। ঘৃণা কেবল ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
সত্যের আলোয় আলোকিত হয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি মৃত্যুর ঊর্ধ্বে ওঠেন।
ঈশ্বরের আলাদা কোনো অস্তিত্ব নেই। আপনার সমস্ত প্রচেষ্টাকে সঠিক পথে রেখে আপনি দেবতাদের সন্ধান করতে পারেন।
FAQ:
মহাবীর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
জৈন ধর্মের ২৪তম তীর্থঙ্কর মহাবীর স্বামী বিহারের কুন্দগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
মহাবীর কোথায় দেহত্যাগ করেন?
জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, মহাবীর পাবাপুরী (অধুনা বিহারে অবস্থিত) দেহত্যাগ করেছিলেন।
মহাবীরের প্রথম শিষ্য কে ছিলেন?
মহাবীরের প্রধান শিষ্য ছিলেন গৌতম স্বামী।