আজকাল, ছেলে হোক বা মেয়ে, প্রত্যেকেই তাদের মুখের ব্রণ দ্বারা বিরক্ত হয় এবং যার জন্য তারা ডাক্তারের কাছে যায় এবং ব্যয়বহুল চিকিত্সা করায়, কখনও কখনও তাদের এই চিকিত্সার ভুল ফলাফল ভোগ করতে হয়। যার কারণে রোগ না কমলেও অন্যান্য ভুল ফলাফল সামনে আসে। তাই ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায় করুন।
পূজোর ফ্যাশন কিন্তু মাস্ট, তাই মানানসই পোশাক পড়া চাই। কিন্তু সব ফ্যাশনই ফিকে হয়ে যাবে যদি ত্বকের হাল বেহাল হয়। আর ত্বকের সমস্যার মধ্যে যেটি সবচেয়ে বেশী ফেম দখল করে বসেছে সে হল ব্রণ। আজকের প্রতিবেদনে আমরা ব্রণর হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া টোটকা সম্বন্ধে আলোচনা করব।
Table of Contents
ব্রণ কি?
ব্রণ মূলতঃ বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা। শুধু আমাদের দেশেই নয় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সকল কিশোর কিশোরীদের মুখে একধরণের গোটা হয়। সাধারণত গালে, কপালে, থুতনিতে জলযুক্ত ফুসকুড়ি ওঠে। একেই ব্রণ বা পিম্পল বলে।
এছাড়াও ব্রণ আপনার মুখ মন্ডল ছাড়াও বুক, উপরের পিঠ এবং কাঁধে দেখা দেয় কারণ ত্বকের এই অংশগুলিতে সর্বাধিক তেল (সেবেসিয়াস) গ্রন্থি থাকে। শরীরের রোমের গোড়া গুলো তেল গ্রন্থিগুলির সাথে সংযুক্ত থাকে।
ব্রণ কেন হয়?
ব্রণ মূলতঃ বয়ঃসন্ধিকালে হয়। অর্থাৎ বয়ঃসন্ধিকালই এর মূল কারণ। তবে বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়েরা এর শিকার হতে পারে। নিম্নে ব্রণ হওয়ার কারণ উল্লেখ করা হল।
১. তৈলাক্ত ত্বক ব্রণ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
২. হরমোন ক্ষরণের তারতম্য ও অভাবে।
৩. জীবানুর সংক্রমনে।
৪. ত্বকের অযত্নের কারণে। তাই নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে।
৫. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা টেনশন ব্রণ হবার অন্যতম কারণ। এছাড়াও দেখা গেছে আপনার অনিদ্রার কারণে ব্রণ হচ্ছে। তাই জীবন থেকে টেনশন যথা সম্ভব কমাতে হবে।
৬. তৈলাক্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
৭. অতিরিক্ত ঘাম হওয়া।
৮. কোষ্ঠকাঠিন্য বা অপরিস্কার পেট থাকলে।
আরও পড়ুন: মহিলাদের জন্য যোগার(Yoga) উপকারিতা
ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
ব্রণ কমাতে হলে কিছু বিশেষ বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিম্নে আলোচনা করা হল।
ত্বক
- যেহেতু মুখের ত্বকে ব্রণ হয় তাই সবসময় ত্বকের নজর রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে ত্বকের লোমকূপে যেন ধূলোবালি না জমে। এইজন্য ভালো ফেসওয়াস বা নরম সাবান দিয়ে মুখ ধুতে হবে।
- বাইরে থেকে এসেই ঘাম মুছে ফেলতে হবে, এরপর জল-সাবান দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
- তৈলাক্ত ত্বকে কখনও অয়েলি ক্রিম মাখবেন না।
খাবার
খাদ্যখাওয়ারের অভ্যেসের কারণেও ব্রণ হতে পারে। তাই খাওয়ারের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। উল্লেখ্য-
কি কি খাবেন না
অয়েলি ভাজাভুজি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
Junk food শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। Junkfood খাওয়া একদম কমিয়ে ফেলতে হবে।
চর্বিযুক্ত মাংস, সামুদ্রিক মাছ কম খাবেন।
মিষ্টি, চকোলেট খাবেন পরিমিত।
কি কি খাবেন
বেশী করে জল খান।
সবজি, ফলের রস, চারা মাছ খাবেন বেশী করে।
দুধ, চর্বিহীন মাংস খেতে পারেন।
অন্যান্য
- রাতে অন্ততঃ ৮ ঘন্টা ঘুমান।
- রোজ ভোরবেলা একগ্লাস চিরতা ভেজানো জল পান করুন।
- এক চামচ অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর সঙ্গে চার-পাঁচটি করে তুলসী ও নিমপাতা পেস্ট করে নিয়মিত খেলে ব্রণের সমস্যায় উপকার পাবেন।
- মাসে একবার অন্ততঃ বিউটি পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল করান।
- দুশ্চিন্তা করবেন না। চিন্তাই হল যেকোনো সমস্যার মূল। মন ফুরফুরে রাখুন।
ব্রণ হওয়ার আগে সম্ভাব্য পূর্বপ্রস্তুতি
- আপনি যদি বিশেষ কিছু টিপস অনুসরণ করেন তাহলে তৈলাক্ত ত্বক হোক বা ব্রণ একেবারেই আসবে না।
- মেকআপ করার আগে ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে মুখ পরিস্কার করে বরফ ঘসে তারপর মেকাপ করবেন।
- জল খাওয়া, ঘুমোনো, ত্বক পরিস্কার রাখার বিষয়গুলি খেয়াল রাখবেন।
উপরিউক্ত বিষয়গুলি মাথায় রাখলেই ব্রণ থেকে চিরতরে মুক্তি পাবেন আপনি। আর পূজোও কাটবে গ্ল্যামারাস।