Basanta Utsav 2023: বসন্ত উৎসব। Basanta Utsav in Bengali

Share It!

বসন্ত উৎসব বা Holi হল সমগ্র বাঙালি তথা ভারতবর্ষের একটি গুরুত্বপূর্ন্য উৎসব। বসন্ত উৎসব মানে রঙের উৎসব। এই উৎসব কে বাঙালিরা দোল উৎসব বা দোল পূর্ণিমা বলেও পালন করে থাকে। এই উৎসবে ৮ থেকে ৮০ সব বয়সের সব ধর্মের মানুষ একসাথে অংশগ্রহন করে থাকে।ভারতবর্ষের অন্যান্য অঞ্চলে হোলি নামে পরিচিত, রঙের উৎসব দোল মূলত পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা,ও আসামে প্রচুর আড়ম্বরপূর্ণ ও উদ্দীপনা নিয়ে পালিত হয় এবং এই উৎসব শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ্য করা হয়।
 
 
Basanta Utsav, বসন্ত উৎসব

2023 সালে বসন্ত উৎসব বা দোল উৎসব এর সময়সূচি

আমাদের দেশে দোল উৎসব এবং Holi উৎসব দুটি ভিন্ন্য দিনে আয়োজিত হয়। যে দিন দোল উৎসব পালন করা হয় ঠিক তার পরের দিন Holi আয়োজিত হয় সমগ্র ভারতবর্ষে। দোল উৎসব আসলে পূর্ণিমার দিন হয়ে থাকে তাই এর ওপর নাম দোল পূর্ণিমা

 

 
2023 দোল উৎসব এর দিন :  7th March 2023 (২২ শে ফালগুন ১৪২৯)
 
2023 Holi  উৎসব এর দিন :  8th March 2023 (২৩ শে ফালগুন ১৪২৯)

বসন্ত উৎসবের ইতিহাস (History of Basanta Utsav)

পৌরাণিককাহিনীঅনুসারে,এই দিনে শ্রীকৃষ্ণরাধার প্রতি তাঁর স্নেহ প্রকাশ করেছিলেনতাই লোকেরা দোলা পালকিতে তাদের সজ্জিত প্রতিমা গুলির কুচকাওয়াজ করে কৃষ্ণ এবং রাধার পুনর্মিলন উদযাপন করেকৃষ্ণএবংরাধারপ্রতিমাগুলিতে রঙিন গুঁড়ো সংমিশ্রণ বা আবির” দিয়ে রঙ মাখিয়ে গন্ধযুক্ত রঙিন করা হয়এবংহরি বলএরজপ করে শোভাযাত্রাকেপ্রাণবন্ত করে তোলা হয়

Read More:  National Sports Day 2023: কবে, কেন এটি শুরু হয়? National Sports Day in Bengali

“ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল লাগল যে দোল,

জলে স্থলে বনতলে লাগল যে দোল,

দ্বার খোল দ্বার খোল। “

দোল পূর্ণিমা বাঙালিদের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ,কারণ এটিই চৈতন্য মহাপ্রভু(1485-1533) এর জন্মদিন। তিনি ছিলেন মহান বৈষ্ণব সন্ন্যাসী । তিনি রাধা ও কৃষ্ণের আবেগকে-প্রেম কে উচ্চ আধ্যাত্মিক করে তুলেছিলেন

প্রথমে বসন্ত উৎসব কিভাবে উদযাপন করা হতো

দোল যাত্রার প্রথম দিনটি “গন্ধুনামে পরিচিত। পৌরাণিক গ্রন্থ অনুসারে, এই দিনেশ্রীকৃষ্ণ ঘুনুচের স্থান দেখার জন্য প্রস্তুত হন। ভক্তরাকীর্তন ঘরবা প্রার্থনা বাড়ির সামনে একটি অগ্নিকান্ডে(আমরা ন্যাড়াপোড়া বলে থাকি)লিপ্ত হন। কৃষ্ণের মূর্তিটি তখন অগ্নিকান্ডের চারদিকে বহন করা হয়। রীতি অনুসারে বৈষ্ণবীরা ঢোল,করতাল বাজিয়ে কীর্তন করেন।সাধারণ মানুষরা ওই দিন ন্যাড়াপোড়া হরির লুটের আয়োজন করে থাকেন।আসলে ন্যাড়াপোড়ার মধ্য দিয়ে সকাল অশুভ শক্তিকে ধ্বংস করা হয়ে থাকে

দোলের দ্বিতীয় দিন ভোর-দেউল নামে পরিচিত – যার প্রধান অর্থ দোল। ভোর দেউল চৈত্রমাসে একদিনের জন্য এবং ফাল্গুন মাসে তিনদিনের জন্য পালিত হয়।

 
দোল যাত্রার তৃতীয় দিনটিও দ্বিতীয় দিনেরমতোই পালন করা হয়।
 
দোল উৎসবের শেষ ও চতুর্থ দিনটি সুরি নামে পরিচিত। সেই দিন, ভগবান কৃষ্ণ ঘুনুচের ঘর থেকে মা লক্ষ্মীর ঘরে ফিরে যান। কৃষ্ণের অনুগামীরা তাকে বা তার মূর্তিকে ওই দিন একটি পালকি বা দোলা করে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
 

বসন্ত  উৎসব এখন কিভাবে উদযাপন হয় (How to celebrate Basanta Utsav)

৮ থেকে ৮০  ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে প্রায় সব ধর্মের মানুষ এই উৎসবে  অংশগ্রন করে থাকে।এই দিন  বিভিন্ন্য  রং এ রাঙিয়া দেওয়া হয় – চলে আবির মাখানো, বিভিন্ন্য  রকম পেইন্ট রং ব্যবহারও  করা হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও সকালে প্রভাতফেরি বের হয় এবং ছেলে মেয়েরা একসাথে বিভিন্ন্য গান ও নাচের থাকে।
 

বাড়ির ছোটরা বড়োদের পায়ে আবির দিয়ে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রদর্শন করে।

এইদিনে নানারকম দুধের  তৈরি মিষ্টান্নয বানানো হয়ে থাকে যেমন মাখন, দধি ইত্যাদি এবং এই মিষ্টি সকলের কাছে অতন্ত্য আনন্দ সহকারে পরিবেশন করা হয়।

Read More:  Rath Yatra 2023 - Best Wishes, WhatsApp Images, messages

বসন্ত উৎসব বা Holi এর স্থান

সাধারণত,বসন্ত বা দোল উৎসব সমাজের ঐতিহ্যের উপর নির্ভর করে দুই -তিন দিনের জন্য চলতে থাকে। কিন্তু মথুরা ও বৃন্দাবন-এ,দোল উৎসবটি ৭-৮ দিন আগে থেকে শুরু করা হয়, কারণ এই দুই স্থানের সাথে কৃষ্ণের জনমের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তাই ওই স্থানে খুব বড়ো করে এই উৎসব পালন করা হয়। 

এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে নবদ্বীপ এর ইস্কন (ISKON)মন্দির এ খুব বড় আকারে এই উৎসব পালন করা হয়, দেশ বিদেশ থেকে অনেক পূর্ণার্থীর সমাগম হয়। 

এছাড়াও Delhi, UP, Bihar, Mumbai- প্রায় ভারতের সবজায়গায় Holi উদযাবন করা হয়ে থাকে।

 

আরো পড়ুন:Rabindranath Tagore। ২২ শে শ্রাবণ কবির প্রয়াণ দিবস

বসন্ত উৎসব এবং শান্তিনিকেতন 

বসন্ত উৎসব বা দোল এর সাথে শান্তিনিকেতন এর নাম একান্ত ভাবে জড়িয়ে আছে আপামর বাঙালির হৃদয়ের মধ্যে। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই উৎসব এর সূচনা করেন বীরভূমের এই শান্তিনিকেতনে। যা আজও সকলের কাছে আকর্ষণের কারণ হয়ে থাকে এই উৎসবের  দিনটিতে। দেশ বিদেশ থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন এবং অংশগ্রন করেন এই দোল উৎসবে।

 

শান্তিনিকেতনে কিভাবে দোল উৎসব পালন করা হয় (Basanta Utsav in Santinikatan)

ভোর বেলা উঠে সকল বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা পরনে হলুদ শাড়ী, মাথায় ফুলের মালা দিয়ে সুন্দর ভাবে সেজে নিত্য প্রদর্শনের সহযোগে প্রভাত ফেরির মাধ্যমে এই উৎসব এর সূচনা করে থাকেন। এর পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই বিখ্যাত গান দিয়ে এই অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্ভাদন করা হয়ে থাকে। যে গান আজও সকল বাঙালির কাছে অতন্ত্য জনপ্রিয়:

মূলত শান্তিনিকেতন এর সেই বিখ্যাত ভুবন ডাঙার মাঠে এই উৎসব পালন করা হয়। সবাই এখানে এসে একে অপরকে নানা রঙে রাঙিয়া তোলে। আকাশে বাতাসে নানা রঙের আবির ছড়িয়ে পড়ে। সারাদিন ধরে নানারকম গান ও নৃত্য প্রদর্শনের অনুষ্ঠান চলতে থাকে। কত বিদেশী পর্যটক আসেন এই উৎসবে অংশগ্রহন করার জন্য। চারদিকে সুন্দর মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

বসন্ত উৎসবের উদেশ্য

বসন্ত উৎসব আসলে একটি নতুন মরসুমকে স্বাগত জানায় যা নতুন সময়ের সূচনা করে। এই সময়ে চাষীরা প্রার্থনা করে একটি ভালো ফসলের মরসুমের জন্য। এই সময়ে সাধারণত দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান সমান থাকে। বসন্ত উৎসব বাঙালী তথা সমগ্র  ভারতবাসীর কাছে অত্যন্ত আনন্দময় একটি উৎসব।

Read More:  Black Friday: ব্ল্যাক ফ্রাইডে আসলে কি ? জানুন Black Friday এর উৎস কোন দেশ, তাৎপর্য, নামের ইতিহাস

আরো পড়ুন:Bengali New Year 2023 । শুভ নববর্ষ।

FAQ:

ওড়িশায় হোলি কোন নামে পরিচিত?

বাংলার মতন এই উৎসবকেও Odisha তে হোলি বা দোল উৎসব বলা হয়।

কোন হিন্দু মাসে হোলি উৎসব পালিত হয়?

ফাল্গুন মাসে।

কে প্রথম বাংলায় দোল উৎসব প্রচলন করে ছিলেন ?

কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর।

Basanta Utsav Quotes In Bengali

হাজার সুতোয় সুতোয় বোনা

সাতরঙের ওই সেই শাড়ি টা ~~~!

জড়িয়ে গায়ে

যাতে আমার ভালবাসা 

জড়িয়ে দিলাম এনে~~!

এসো মেয়ে সামনে এসো

বসন্তের এই দিনে~~~


ধরণী আজ উঠিছে সাজি

মনের দক্ষিণ দার খুলে দেবো আজি

মাতাল হবো সুখে আজকে অনন্ত

সার্থক হবে ফাগুন, সার্থক বসন্ত।


বসন্ত মাস ভালোবাসায় ভরপুর

তুমি আর আমি ঘুরবো সারা দুপুর

বসন্তের ফুল গুজে দেবো তোমার খোপায়

ভালোবাসার এটাই তো সেরা সময়।


গলায় মালা হাতে বালা 

পায়ে গাঁদার মল 

মাথায় টিকলী কানের দুলে 

দুলবে গাঁদার ফুল। 

খোঁপার চুল বাঁধবো সখা

কৃষ্ণচূড়ার লালে।।


দেখো বসন্তের বাতাস বইছে আজি

এসো বসন্তের রঙে সাজি,

আজ ঘুরে ফিরে চাইছে না যে

আমার এ মনের মাঝি ।


গাছে গাছে নতুন পাতা..

ফুল ফুটছে বেস।

সব পাখির মন খারাপ..

শীতের হলো শেষ।

নতুন রুপে,নতুন সাজে..

নিভাবে মনের আগুন।

তাইতো আজ প্রকৃতি জুড়ে।।

বসন্তের ফাগুন।

Leave a Comment