বাঙালির অন্যতম উৎসব হল দূর্গা পূজা। সারাবছর কচি-কাচা থেকে শুরু করে বৃদ্ধবনিতা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে এই উৎসবের।
Table of Contents
নবপত্রিকা আসলে কি
এই পুজোতে মা দুর্গা ও তার চার ছেলে মেয়ে ছাড়াও আমাদের কৌতুহল থাকে শ্রী গণেশের পাশে থাকা নবপত্রিকা অর্থাৎ প্রচলিত ভাষায় কলাবউ কে কেন্দ্র করে।অনেকে মনে করে থাকেন ইনি হচ্ছেন আমাদের শ্রী গণেশ বাবাজীবনের স্ত্রী। কিন্তু কলাবউ গণেশের স্ত্রী নয়, মহামায়ার ভিন্ন রূপ অর্থাৎ শ্রী গণেশের জননী। গণেশর দুই জন স্ত্রী হলেন ঋদ্ধি ও সিদ্ধি।
নবপত্রিকা প্রতিস্থাপন
কলাবউ এর অপর নাম নবপত্রিকা, যার অর্থ নয়টি পাতা। এগুলি হল কলা, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, দাড়িম, অশোক, মান ও ধান। একটি কলাগাছের সঙ্গে অপর আটটি উদ্ভিদের শিকড় ও পাতা বেঁধে দেওয়া হয় অপরাজিতা লতার সাহায্যে। মহা সপ্তমীর সকালে এই নব পত্রিকা স্নান করিয়ে লাল পাড়ওয়ালা সাদা শাড়ি জড়িয়ে তাকে ঘোমটাপরা বধূর আকার দেওয়া হয়। সিঁদুর দান করে দুর্গার ডানদিকে তথা গণেশের পাশে স্থান দেওয়া হয় নবপত্রিকাকে।
নবপত্রিকার ৯টি রূপের বর্ণনা
- কলা রূপে ব্রহ্মাণী
- কচু রূপে কালিকা
- হলুদ রূপে উমা,
- জয়ন্তী রূপে কার্তিকী,
- বেল রূপে শিবানী,
- দাড়িম অর্থাৎ ডালিম রূপে রক্তদন্তিকা,
- অশোক রূপে শোকরহিতা,
- মান রূপে চামুণ্ডা এবং
- ধান রূপে লক্ষ্মী।
শাস্ত্রে বলা হয়‘নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা’।অনেক জায়গায়মূর্তির বদলে মায়েরএই নবপত্রিকারপুজো হয়। শক্তির আরাধনার পাশাপাশিএই নয়টিউদ্ভিদের পুজোয়আসলে ভারতেরপ্রাচীন কৃষি ব্যবস্থারকথাই মনে করায়।ভারতের মতো কৃষিপ্রধানদেশে যাতে শস্যেরফলন ভালো হয়, তাই ন’টিউদ্ভিদের পাতা ওশিকড়কে দেবী রূপেপুজো করা হয়।
নবপত্রিকার অধিষ্ঠানের পরে মূল অনুষ্ঠানের প্রথাগত সূচনা হয়। মণ্ডপে প্রবেশের আগে দেবীর নয়টি রূপের মধ্যে কেবলমাত্র দেবী চামুণ্ডার পুজো ও আবাহন করা হয়। সপ্তমী থেকে দশমী নবপত্রিকা প্রতিমাস্থ দেবদেবীদের সঙ্গেই পূজিত হতে থাকে।