আজ, ২৯ মে ২০২৫, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং ধীরে ধীরে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এটি আজ বিকেলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূলের মধ্যবর্তী স্থানে স্থলভাগে প্রবেশ করবে।
এই নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গেও প্রবল বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
নিম্নচাপের বর্তমান অবস্থা ও গতি
আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নিম্নচাপটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যা সাগরদ্বীপ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে, দিঘা থেকে ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ২১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত।
নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং আজ বিকেলের মধ্যে সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে।
দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস
নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আজ এবং আগামীকাল ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায় ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস
উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে শুক্রবার লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যেখানে প্রবল বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং এবং কোচবিহারে রবিবার পর্যন্ত অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহেও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অঞ্চলে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
উপকূলীয় সতর্কতা ও পরামর্শ
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার উত্তর এবং সংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উপকূলে হাওয়ার গতি ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এই সময়ে সমুদ্র উত্তাল থাকবে। ২৮ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
কলকাতার তাপমাত্রা ও বর্ষা পরিস্থিতি
বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৪ ডিগ্রি কম। বুধবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে ৩.৭ ডিগ্রি কম।
কেরলে বর্ষা প্রবেশ করলেও পশ্চিমবঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ষা ঢোকেনি। নিম্নচাপের পরিস্থিতির উপর অনেকাংশে বর্ষার আগমন নির্ভর করছে।
আজ বিকেলের মধ্যে নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। এর প্রভাবে দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে আবহাওয়া দপ্তরের নির্দেশিকা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে।