দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবং কলকাতা-সহ কয়েকটি জেলায় আজ (২৬ মে) ভারী বর্ষণ হতে পারে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তরবঙ্গের কিছু অংশেও বৃষ্টিপাত হবে। মৌসুমী বায়ুর এই খামখেয়ালির জন্য এই অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন কিছুটা ব্যাহত হতে পারে।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে যে আগামী কয়েক দিন আবহাওয়া এরকমই থাকবে। অর্থাৎ বৃষ্টিপাত মাঝে মাঝেই হবে উত্তর এবং দক্ষিণের জেলাগুলিতেl
দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া পরিস্থিতি
কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদীয়া ও পূর্ব বর্ধমান – এই পাঁচ জেলায় আজ সকাল থেকেই ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেছে আকাশ।
আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, দুপুরের পর থেকে এই অঞ্চলগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত তা প্রবল আকার ধারণ করতে পারে। কিছু এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বর্ষণেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় সেখানে বৃষ্টির তীব্রতা কম হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। পার্বত্য অঞ্চলে হালকা কুয়াশা এবং বৃষ্টির সমন্বয়ে এক অদ্ভুত আবহাওয়ার সৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়ার বিস্তারিত পূর্বাভাস (২৬ মে):
অঞ্চল | বৃষ্টির সম্ভাবনা | তাপমাত্রা (সেলসিয়াস) | আর্দ্রতা | বাতাসের গতি |
---|---|---|---|---|
কলকাতা | ভারী বৃষ্টি | ২৮°-৩৪° | ৮৫% | ১৫-২০ কিমি/ঘণ্টা |
হাওড়া | মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি | ২৭°-৩৩° | ৮০% | ১০-১৫ কিমি/ঘণ্টা |
দার্জিলিং | হালকা বৃষ্টি | ১৮°-২৪° | ৭৫% | ৮-১২ কিমি/ঘণ্টা |
জলপাইগুড়ি | বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি | ২৩°-২৯° | ৭০% | ১০-১৫ কিমি/ঘণ্টা |
বৃষ্টির কারণে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে যানজট ও জলাবদ্ধতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। পুলিশ ও প্রশাসন ইতিমধ্যেই নিম্নাঞ্চলগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। নদী-নালায় জলস্তর বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া বিজ্ঞানী ড. সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “বঙ্গোপসাগর থেকে আসা আর্দ্র বায়ুপ্রবাহ এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝার সংমিশ্রণে এই অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা এই অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।”
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই সময়ে অতিবৃষ্টি আমন ধানের চারা রোপণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতার সমস্যা নেই, সেখানে এই বৃষ্টি মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী তিন দিন ধরে এই বৃষ্টিপাত চলতে পারে। বৃষ্টির কারণে রাজ্যের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বন্যা প্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।
আবহাওয়ার এই পরিস্থিতির জন্য অস্থির মুহূর্তে সবাইকে নিরাপদে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। বাড়ির বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা বা রেইনকোট সঙ্গে রাখুন এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত চেক করুন।