গান্ধীজয়ন্তী ২০২২: জানুন গান্ধিজীর আদর্শ ও তাঁর সম্পর্কে কিছু কথা। এবছর কোন বারে গান্ধীজয়ন্তী

Share It!

প্রতি বছরের মতো বছরও গান্ধী জয়ন্তী পালন করতে চলেছি। গান্ধী জয়ন্তী মানে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন। কিছু মানুষ আছেন যারা তাদের সারাজীবনে কিছু করতে না পারার জন্য কষ্ট পেতে থাকেন এবং তারা জীবনে বিশেষ কিছু করতে সক্ষম হন না। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন যারা অন্যদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সময়মতো নিজেদের উন্নত করে এবং যা চায় তাতে সাফল্য পায়। 

আজ আমরা জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী অর্থাৎ গান্ধীজির ব্যাপারে জানব। যার কাজ এবং উদ্যেশ্য আমাদের সবসময় অনুপ্রাণিত করে। 

গান্ধীজয়ন্তীর তাৎপর্য

সামনেই গান্ধীজয়ন্তী। প্রতিবছর ২ রা অক্টোবর গান্ধীজীর জন্মদিনকেই গান্ধীজয়ন্তী হিসেবে উদযাপন করে গোটা দেশ। এবছর মহাত্মা গান্ধীর ১৫৩ তম জন্মদিন পালন করতে চলেছি আমরা। 

আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: দূর্গাপূজার নির্ঘন্ট, সঠিক সময়সূচী ও দেবীর আগমন-গমনের বিবরণী

এবছর গান্ধীজয়ন্তী কি বার পড়েছে?

২০২২ সালে রবিবার ২রা অক্টোবর উদযাপিত হবে গান্ধিজয়ন্তী। 

* উল্লেখ্য ২০০৭ সালের ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২রা অক্টোবর আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন: এই যোগা করলে দীর্ঘদিন আপনার যৌবন অটুট থাকবে, সঙ্গে স্মৃতি শক্তিও

ভারতবর্ষে গান্ধিজীর নেতৃত্বে ঘটা কিছু আন্দোলন

১. চম্পারণ আন্দোলন (১৯১৮): ইংরেজ ও জমিদারদের বিরুদ্ধে কৃষকদের দিয়ে বলপূর্বক নীলচাষ করানোর অভিযোগ তুলে গান্ধিজী চম্পারণ আন্দোলনে সামিল হন।

২. খিলাফত আন্দোলন (১৯১৯): গান্ধীজির নেতৃত্বে প্রথম সর্বভারতীয় আন্দোলন এটি। হিন্দু ও মুসলিমদের একত্রিত করে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে মহাজোট তৈরি করেন তিনি।

৩.অসহযোগ আন্দোলন (১৯২০): জালিয়ান‌ওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দোলনের সুত্রপাত করেন গান্ধিজী। এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়রা যেন কোনোভাবেই ইংরেজদের পক্ষ না নেয় সেই বিষয়ে সচেতনতা জারি করা।

Read More:  Ram Navami 2023: জানুন Date, ইতিহাস, তাৎপর্য, Celebration, Quotes, Images I Ram Navami in Bengali

৪.ডান্ডি অভিযান (১৯৩০): ভারতীয়দের লবণ করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডান্ডি লবণ কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন মহাত্মা গান্ধী।

৫. হরিজন আন্দোলনে যোগদান (১৯৩৩): হরিজন আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ২১ দিন ধরে অনশন করেছিলেন।

৬. ভারত ছাড়ো আন্দোলন (১৯৪২): ডান্ডি অভিযানের সুত্র ধরে ব্রিটিশদের ভারত থেকে তাড়াতে বিস্তৃতভাবে ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু করেন তিনি।

আরও পড়ুন: গনেশ চতুর্থী ২০২১: জানুন তিথি, পূজোর বিধি, নিয়ম। গনেশ চতুর্থীর ১২টি তাৎপর্য

গান্ধীজির মৃত্যু

১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি, স্বাধীনতার পরের বছর‌ই মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে গুলি করে হত্যা করেন নাথুরাম গডসে। সে সময় তিনি নতুন দিল্লীর বিড়লা ভবনে পথসভা করছিলেন। তাঁর হত্যাকারী ছিলেন একজন হিন্দু মৌলবাদী যার সাথে চরমপন্থী হিন্দু মহাসভার যোগাযোগ ছিল।

আরও পড়ুন: পেটের মেদ কমানোর সেরা ১৫ টি উপায়

গান্ধীজির আদর্শ

  • গান্ধীজি অহিংস মন্ত্রে দীক্ষিত ছিলেন। তার কথায় “অহিংসা পরম ধর্ম”। বাপু মনে করতেন কেউ একগালে চড় মারলে তাকে অপর গাল বাড়িয়ে দেওয়া উচিৎ। 
  • গান্ধীজির মত ছিল, দেশের মাটি, দেশের খাদ্য, দেশের তাঁতির বোনা কাপর‌ই আমাদের ভবিতব্য। তাই বিদেশী পন্য বর্জন করে তিনি খাদির বস্ত্র পরিধান করতেন। এমনকি নিজের কাপড় চড়কায় বুনে নিজেও তৈরি করতেন বলেই শোনা যায়।
  • গান্ধীজি চা পানের বিরোধী ছিলেন। তার মত, যেকোনো নেশাদ্রব্য‌ই শরীর তথা অন্তরকে দূর্বল করে দেয়। তিনি বরাবর ছাগদুগ্ধ পান করতেন।
  • বাপু মনে করতেন সকলের ভালােতে নিজের ভালাে বা কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
  • রাষ্ট্রপিতার মতে কাজের কোনো ভেদাভেদ হয় না। তিনি মনে করতেন সৎপথে কাজ করলে উকিল ও নাপিতের কাজের মূল্য সমান। এবং একজন শ্রমিকের জীবন আদর্শ জীবন।
  • গান্ধীজি কৃষি প্রধান ভারতের উন্নয়নের স্বার্থে গ্রামকে নতুনভাবে গঠন করার উপর জোর দিয়েছিলেন। কারণ তিনি মনে করতেন কৃষির অগ্রগতি হলেই দেশের উন্নতি নিশ্চিত।
  • গান্ধিজি শ্রেণিহীন, শােষণহীন সাম্যভিত্তিক অহিংস সমাজকে আদর্শ বলে মনে করতেন। বাপুর কল্পনাপ্রসূত এই অহিংস গণতান্ত্রিক সমাজই হল রামরাজ্য।
  • গান্ধীজি স্বরাজের পক্ষে ছিলেন। তিনি ব্যক্তিকেই কর্তৃত্ব ও মূল্যবােধের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান দিয়েছিলেন, তাই তিনি জনগণের সার্বভৌমিকতা বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি মনে-প্রাণে এই মতের বিশ্বাসী ছিলেন যে, “জনগণই মূল, রাষ্ট্র ফল মাত্র। মূলটি যদি মধুর হয়, ফলটিও সুমিষ্ট হবে।”
 
 

গান্ধীজির বিশেষ উক্তি

এমন ভাবে বাঁচো যেন কাল তুমি মরবে। এমনভাবে শেখো যেন তুমি সর্বদা বাঁচবে।

আপনি নিজে সেই পরিবর্তন হোন যা আপনি সারা বিশ্বে সবার মধ্যে দেখতে চান।

আপনার বিশ্বাস আপনার চিন্তাধারা হয়ে যায়, আপনার চিন্তাধারা আপনার শব্দে পরিণত হয়, আপনার শব্দ আপনার কর্ম হয়ে যায়, আপনার কর্ম আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়, আপনার অভ্যাসই আপনার মূল্য, আপনার মূল্যই আপনার নিয়তি।

ভীড়ের মধ্যে দাঁড়ানো সহজ, কিন্তু একাকী দাঁড়াতে সাহস দরকার।

আরও পড়ুন: Motivational Story: স্বামী বিবেকানন্দের ছেলেবেলার দুটি ঘটনা যা বদলে দেবে আপনার চিন্তাধারা

Leave a Comment