‘স্বদেশে পূজ্যতে রাজা, বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে’ এই প্রবাদটির মাহাত্ম্য বড় প্রকট হয়ে উঠছে দিনপ্রতি। এই মন্দার দেশে কেবলমাত্র শিক্ষার জোরই আমাদের শিরদাঁড়া ঋজু রাখতে পারে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। আর তাই করোনার মতো অতিমারী দেশে থাবা বসালেও পড়াশোনায় টালবাহানা কিন্তু হচ্ছেনা। ছাত্রছাত্রীদের বছর লস করাতে চাননা কেউই। কারণ সকলেই বোঝেন, শিক্ষাই হল অগ্রগতির চাকা।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে একঝাঁক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে অন্যতম ছিল স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। মাননীয়ার কথায়, এবার আর পড়াশোনার খরচ চালাতে বাবা মায়ের সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে না। সকল ছাত্রছাত্রীদের ১০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই টাকা আসবে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে।
কোন শর্তে ক্রেডিট কার্ড পাওয়া যাবে, কারা যোগ্য ছাত্র ক্রেডিট কার্ডের জন্য, এই বিষয়ে বিস্তারিত জানুন।
১. স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের উদ্দেশ্য
মূলত সব অর্থনৈতিক শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে তার জন্যই এই উদ্যোগ। অনেকসময়, টাকার অভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভালো কলেজে কিংবা বিদেশে গিয়ে পড়ার সুযোগ হাতছাড়া করে ফেলে। তা যেন আর না হয়, সেটাই নিশ্চিত করছে এই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড।
আরও পড়ুন: ওজন কমানোর ৫ টি সেরা Health Drinks
২. স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের নিয়ম ও নির্দেশিকা
১. আপনাকে শিক্ষার্থী হতে হবে অর্থাৎ কেবল পড়াশোনা চালানোর জন্যই আপনি এই টাকা পাবেন।
২. পড়াশোনা শেষে চাকরি পাওয়ার ১৫ বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে।
৩. আপনাকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
৪. সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা ঋণ পাবেন আপনি।
৫. দশম থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত যাবতীয় পড়াশোনার ক্ষেত্রে এই লোন মিলবে।
আরও পড়ুন: মেয়েদের গ্রীন টি [Green Tea] এর উপকারিতা। অপকারিতা
৩. স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা
১. এই লোনের গ্যারান্টার হবে খোদ রাজ্য সরকার।
২. দেশের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার ভারবহনও করবে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড।
৩. ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋনে কোনো সুদের টাকা গুনতে হবে না। তবে ৪ লাখের পর ৪% সুদ দিতে হবে।
৪. চাকরি পাওয়ার পর ১৫ বছর সময় দিচ্ছে সরকার, যা অনেক বেশী।
৫. দশম শ্রেণীর পরেই আবেদন করা সম্ভব! অর্থাৎ কম বয়সে স্বল্প সুদে সহজে পড়াশোনা চালাতে পারবে সমাজের সকল শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা।
আরও পড়ুন: PPF Account এর ১১ রকমের সুবিধা, অসুবিধা
৪. এই কার্ডের আবেদনের যোগ্যতা
নিম্নে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদনের যোগ্যতা সম্পর্কে জানানো হল:
- ছাত্রছাত্রীদের পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। (কমপক্ষে ১০ বছর যাবৎ
- ছাত্রছাত্রীর বয়স ৪০ য়ের নীচে হওয়া বাঞ্ছনীয়।
৫. আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিসমূহ
- আবেদনকারীর ঠিকানার প্রমাণপত্র
- পরিবারের বার্ষিক আয়ের নথি
- আবেদনকারীর রঙীন ছবি
- আবেদনকারীর সাক্ষর
- আবেদনকারীর প্যান কার্ড
- অভিভাবকের প্যান কার্ড
- আবেদনকারীর আধার নম্বর
- ব্যাঙ্ক আকাউন্ট (Bank account details)
- শেষ যে উচ্চতর ডিগ্রী রয়েছে তার নথি
- বর্তমানে যে কোর্সে পড়ছে তার অ্যাডমিশনের কাগজ
৬. কীভাবে আবেদন করবেন
প্রথমে রাজ্য শিক্ষাদফতরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট wbscc.wb.gov.in যেতে হবে —> Online Student Credit Card Registration Form য়ে ক্লিক করুন —> রেজিস্ট্রেশনের পর যাবতীয় নথি দিয়ে ফর্মটি পূরণ করুন —> Submit
আপনার স্ক্রিণে Application Submitted to HOI দেখাবে। এর অর্থ হল আপনার আবেদন ও যাবতীয় তথ্যাদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে চলে গিয়েছে।
সেখানে সমস্ত কিছু যাচাই হওয়ার পর আপনার আবেদন পৌঁছোবে HED (Higher Education of Department) এর কাছে। এরপর তিনিও এটি যাচাই করবেন। সবশেষে এটি পৌঁছুবে ব্যাঙ্কে। সেখানে যদি অ্যাপ্রুভ হয় তবেই আপনার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: জানেন কি! কিডনিতে পাথর কেন হয়? কিডনি পরিশ্রুত করার ১০ টি ঘরোয়া উপায়
আরও পড়ুন: মানসিক স্বাস্থ্যকে দৃঢ় করার ৮ টি সুপারফুড [Super-food]
