বর্তমান যুগ প্রগতির। এসময় ঘরে বেকার বসে থাকতে কেউই চাননা। পাশাপাশি স্যোশাল মিডিয়ার রমরমার বাজারে নতুন স্টার্টআপ শুরু করা আর তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া অত্যন্ত সহজসাধ্য হয়ে গিয়েছে। আর তাই আজকের প্রতিবেদনে উৎসবের মরশুমে সহজে নতুন ব্যবসা শুরুর একঝাঁক নতুন আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করব।
সামনেই কালীপূজা, অর্থাৎ আলোর উৎসব। জেনে নিন, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে কি কি ব্যবসায় হাতেখড়ি করতে পারবেন আপনি।
Table of Contents
বাজির ব্যবসা
কালীপূজা এবং দীপাবলি উৎসবে সবথেকে বেশী যে জিনিসটির চাহিদা থাকে তা হল বাজি। পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই এমনকি বাইরের রাজ্যেও মহা সমারোহে দীপাবলীতে বাজি ফাটানো হয় এবং প্রতিযোগীতাও করা হয়।
এমতবস্থায় আপনি যদি হোলসেল মার্কেট থেকে বাজি কিনে এনে আপনার এলাকায় খুচরো বিক্রি শুরু করতে পারেন তবে বেশ ভালোই লাভবান হবেন। ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার প্রাথমিক বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎসব শেষে তিনগুণ লাভবান হতে সক্ষম আপনি।
* উল্লেখ্য: বাজির ব্যবসা শুরুর আগে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে গিয়ে অনুমতি নিতে হবে।
আরো পড়ুন: জানুন PPF Account এর ১১ রকমের সুবিধা, অসুবিধা
লাইটিংয়ের ব্যবসা
দীপাবলি অর্থাৎ আলোর রমরমা। এসময় কোনো বাড়ি অন্ধকারে থাকেনা। টুনি লাইট ছাড়াও নানাধরণের হালফ্যাশানের আধুনিক ডিজাইনের আলো দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়ে থাকে। আপনি যদি সামান্য রিসার্চ করে আকর্ষণীয় ডিজাইনের আলো তুলতে পারেন তবে নিজের এলাকায় খুচরো বিক্রেতা হিসেবে সহজেই লাভবান হতে পারবেন আলোর ব্যাপারী হিসেবে।
আপনি যদি কলকাতায় থাকেন তাহলে Chandni Chowk মার্কেট এ অনেক লাইট এর whole sale price এর দোকান পাবেন যারা অনেক সস্তায় এই লাইট গুলো বিক্রি করেন।
আরো পড়ুন: বাস্তু মেনে বাড়ি সাজিয়াছেন? রইলো বিপদ এড়ানোর ১০ রকম উপায়
রঙীন মোমবাতি ও প্রদীপ তৈরি
যতই টুনি লাইট জ্বলুক না কেন, বাঙালি কালীপূজার আগের রাতে চোদ্দপ্রদীপ ধরাবেই। প্রদীপের অভাবে মোমবাতি জ্বালিয়েও অনেকে নিয়ম পালন করে থাকেন।
এসময় যদি আপনি গঙ্গামাটি তুলে এনে নিজের হাতে শৌখিন প্রদীপ বানিয়ে ফেলতে পারেন তবেই কেল্লাফতে। সেই ছবি তুলে নিজের স্যোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্ট করে দিন। সহজেই আপনার ক্রেতা জোগার হয়ে যাবে।
এর পাশাপাশি বিভিন্ন আকৃতির রঙীন মোমবাতিও তৈরি করতে পারেন ঘরে বসে। সস্তা মোমের স্টিক কিনে এনে তা গলিয়ে ফেলুন। তাতে লাল, হলুদ, সবুজ ফুডকালার মেশাতে পারেন। চাইলে আর্কেলিক পেইন্ট মেশান। এবার সেটা বিভিন্ন সাইজের মোল্ড বা কাগজের কাপে ঢালুন। অল্প সময়েই তা জমে গিয়ে আকর্ষণীয় মোমবাতিতে পরিণত হবে। এবার কায়দা করে ছবি তুলে স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ফেলুন। ক্রেতার অভাব হবে না।
আরো পড়ুন: ব্রণর হাত থেকে মুক্তি পেতে এই বিশেষ কাজগুলো করুন
মিষ্টি, বেকারি ও হোমমেড চকোলেটের ব্যবসা
দীপাবলিতে মিষ্টির থাকবেনা তা কেমন করে হয়! আর এই মিষ্টিকে হাত করেই আপনিও হয়ে উঠতে পারেন ব্যবসায়ী। ছানা কিনে এনে তাতে বিভিন্ন ফ্লেভার দিয়ে সামান্য এক্সপেরিমেন্ট করে ফ্লেভারফুল সন্দেশ তৈরি করতে পারেন।
পূজার মরশুমে তৈরি করতে পারেন কেক, বিস্কুট। এরজন্য ইন্টারনেট থেকে রেসিপি দেখে নিন।
আজকাল ঘরে তৈরি চকোলেটের ডিমান্ড বেশী। দুধ, কোকো পাউডার, চিনি, ভ্যানিলা এসেন্স, নাটবাদাম কিনে এনে রেসিপি দেখে বানিয়ে ফেলুন চকোলেট বার। এরপর সেগুলোর ছবি পোস্ট করুন স্যোশাল মিডিয়ায়।
চাইলে এবছর নিজের আত্মীয়দেরকেও নিজের হাতে বানানো মিষ্টি চকোলেট উপহার দিন। কে বলতে পারে আগামীতে তারা আপনার স্থায়ী গ্রাহক হবেন কিনা!
উল্লেখ্য: খাদ্যদ্রব্য বানানোর ক্ষেত্রে গুনমানের উপর নজর রাখা অবশ্য প্রয়োজন। তা থেকে যেন ফুড পয়জনিং না হয় সেবিষয়টি খেয়াল রাখবেন।
আরো পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক এড়ানোর ১০টি সহজ উপায়।
ড্রাইফ্রুটস(Dry-fruits)প্যাকিংয়ের ব্যবসা
দীপাবলিতে কাজু, কিশমিশ, আখরোট, বাদাম উপহারে পাঠানো হয় অনেক সময়ে। কিন্তু যে বাক্সে বা প্যাকেটে কিনেছেন তাতে করেই উপহার দিয়ে দেওয়া খুব একটা নন্দনীয় নয়। তাই এবার ড্রাইফ্রুটস সাজুক সামান্য শোভনীয়তায়। আর তা থেকেই আপনি শুরু করতে পারেন স্টার্টআপ।
চেলি, সুন্দর কাগজ, বাক্স আর নিজের হাতের গুনে সাজানোর চেষ্টা করুন শুকনো ফলদের, তাদের আকর্ষণীয় করে তুলুন। এবার নিজের স্যোশাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দিতে পারেন নিজের আইডিয়ার। গ্রাহক জোগার হলে তাদের থেকে অ্যাডভান্স টাকা নিয়ে নিজের কাজ শুরু করে দিন।
আরো পড়ুন: ফ্যাটি লিভারের ডায়েট চার্ট
তৈরি পুজোর সামগ্রী বিক্রির ব্যবসা
আজকাল মানুষ উৎসবের মরসুমে বাজারে যায় পূজার জিনিস কিনতে। আপনি চাইলে রেডিমেড পুজোর সামগ্রী পাঠানোর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পূজায় ব্যবহৃত সব ধরনের উপকরণের প্যাকেট বিক্রির কাজ করতে পারবেন এই ব্যবসায়। এই ব্যবসায় আপনাকে মাত্র ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
আজকাল বাজারে এই ধরণের ব্যবসার চাহিদা খুব বেশি হয়ে উঠছে এবং আপনি এই মৌসুমে এই ব্যবসা থেকে ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এই ধরনের ট্রেডিংয়ে আপনি সহজেই ২৫ থেকে ২০% মার্জিন পেতে পারেন।
তাহলে আর অপেক্ষা কিসের! পূজায় আনন্দ করার পাশাপাশি আপনার পকেটে যদি দুপাই আমদানি হয় তবে লাভ বই ক্ষতি তো নয়! চাইলে এই ব্যবসা আপনি প্রত্যেক মরশুমে রাখতে পারেন।
আরো পড়ুন: এই যোগা করলে দীর্ঘদিন আপনার যৌবন অটুট থাকবে, সঙ্গে স্মৃতি শক্তিও
আরো পড়ুন: কালীকথা-জানুন বঙ্গের লোকপ্রিয় কালীমন্দির ও শক্তিপীঠের কথা ও ইতিহাস।